গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর শহরে জেলা পরিষদের জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে সারি সারি দোকান। কে বা কাহারা জেলা পরিষদের জায়গা দখল করে গড়ে তুলছে এসব বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি নয়। তবে ঠিক মতোই চলছে দোকান ভাড়া। এসব দোকানঘর নির্মাণের ফলে শ্রীপুর পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সরু সড়কটিতে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হয় যানজট, চলাচলকারী পথচারীরা পড়ে অসহনীয় ভোগান্তিতে। মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বলছেন সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছ থেকে যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মার্কেট নির্মাণ করেছেন তাঁর, তবে কে নির্মাণ করছেন এবিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি তারা। অপরদিকে জেলা পরিষদের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা বলছেন মার্কেট নির্মাণ করার জন্য কাউকে অনুমতি দেয়া হয়নি।
সরজমিন ঘুরে দেখাযায়, শ্রীপুর পৌরসভার থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হয়ে গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি সংযোগ সড়কের পূর্ব পাশে সরু রাস্তার পাশে গড়ে উঠেছে একাধিক দোকান। এসব দোকানগুলোর একেবারে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘেঁষা। এই সড়কে রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। রয়েছে হাজার হাজার রোগীর যাতায়াত। রাস্তা পাশে মার্কেট নির্মাণের ফলে প্রতিনিয়ত হয় যানজট। ইতিমধ্যে মার্কেট নির্মাণের কাজ শেষ করে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন দোকান। এসব দোকানে ঝুঁকি নিয়ে কেনাকাটাও করতে দেখা যায় অনেকেই।
হাসপাতালে আসা শামীম হোসেনের সঙ্গে কথা হয় মার্কেটের পাশে। তিনি বলেন, হাসপাতাল একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। হাসপাতালের একপাশে নতুন করে নির্মাণ হয়েছে মার্কেট, অপর পাশে কতগুলো অস্থায়ী দোকান। রাস্তার দুপাশে মার্কেট আর অস্থায়ী দোকান থাকার কারণে পরিবহন ও হেঁটে চলাচল করা খুবই কঠিন। হেঁটে চলাচল সম্ভব নয়। পরিবহনে উঠলে যানজট। এগুলো উচ্ছেদ করে ভোগান্তি দূর করার দাবি করেন তিনি।
হাসপাতালে আসা অপর অসুস্থ রোগীর স্বজন তাসলিমা খাতুন বলেন, চৌরাস্তা থেকে হাসপাতালে আসার রাস্তায় প্রায় সব সময় যানজট লেগে থাকে। হাসপাতালের রাস্তাটা আরও প্রসস্থ হলে এই সমস্যা হত না। দুপাশের অস্থায়ী স্থাপনা ভেঙে রাস্তা প্রসস্থ করলে আমাদের ভোগান্তি দূর হবে।
এই সড়কে চলাচলকারী সিএনজি চালক মো. রমজান আলী বলেন, আমাদেরকে প্রতিদিন এই সড়কে যানজটের মধ্যে পড়তে হয়। এই সড়কের পাশে নির্মাণ হয়েছে মার্কেট। এই মার্কেট এখানে না থাকলেও হয়তো এত বেশি যানজটের সৃষ্টি হত না।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রনয় ভূষণ দাস বলেন, হাসপাতালের সীমানাপ্রচীর ঘেঁষা কতগুলো অস্থায়ী দোকান, এসকল দোকান থাকার কারণে হাসপাতালের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি হাসপাতালের রাস্তা আরও প্রসস্থ হলে সকলেই অনেকে সুবিধা।
শ্রীপুর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মাসুদ প্রধান বলেন, জেলা পরিষদ কতৃপক্ষের কাছ থেকে আমার একজন লোক সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। আমি কয়েকটি দোকানের দেখাাশোন করি। তিনি আরও জানান, পরে যে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো অবৈধ। পরে যে ঘরগুলো নির্মাণ করছে তারা কে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি।
জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার মো. মামুন বলেন, এবিষয়ে জেলা পরিষদের জায়গায় কাউকে মার্কেট নির্মাণের কোন ধরনের অনুমতি দেয়া হয়নি। জেলা পরিষদ কখনও সরু রাস্তার পাশের জমি মার্কেট করার জন্য অনুমতি দেয়না। এবিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
মিজানুর রহমান মার্কেট নির্মাণের বিষয়টি আমার জানা নেই। আগে যে সকল জমি লিজ দেয়া ছিলো সেগুলোর মেয়াদকাল কয়েকবছর আগে শেষ হয়েছে। নতুন করে কাউকে মার্কেট নির্মাণের জন্য লিজ দেয়া হয়নি।
গাজীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসন মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, এবিষয়ে খোঁজ খবর নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হবে।