রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি
বিচারের দাবিতে ছেলের লাশ নিয়ে থানায় হাজির বাবা
/ ৩০৬ Time View
Update : রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৬:১১ পূর্বাহ্ন



গাজীপুরের শ্রীপুরে এক যুবককে চুরির অপবাদ দিয়ে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে ছেলেকে বাঁচাতে না পেরে অ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহ নিয়ে থানায় হাজির হয়েছেন বাবা।

শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে তাকে আটক করে চোরের অপবাদ দিয়ে আটকে রেখে মারধর করা হয়। পরে স্বজনরা স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে তার মৃত্যু হয়।

নিহত যুবক রানা মিয়া (৩০) উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের মো. আমিরুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি কারখানায় চাকরি করতেন।

অভিযুক্তরা হলেন- স্থানীয় ভাঙারি ব্যবসায়ী কেওয়া পশ্চিমখণ্ড গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে মো. শিপন মিয়া (২৫), আকাশ মিয়া (২২), উজ্বল মিয়া (২৫) ও আবুল কাশেমের ছেলে ইমন (২৬)।

নিহত, অভিযুক্তদের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অভিযুক্ত শিপন ভাঙারি ব্যবসা করেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে ভাঙারি সংগ্রহ করতে ব্যবহার করা হতো ১৫টি ভ্যানগাড়ি। সম্প্রতি বিভিন্ন সময় শিপনের পাঁচটি ভ্যানগাড়ি চুরি হয়। শনিবার ভোররাত ৩টার দিকে ভ্যানগাড়ি চুরির অভিযোগ এনে রানাকে আটকে রাখে শিপন। পরে রাত থেকে দিনভর মারধর ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মারধরে তিনটি ভ্যানগাড়ি চুরির কথা স্বীকার করে রানা। পরে স্থানীয়রা রানাকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। স্থানীয়দের অনুরোধ উপেক্ষা করে সবার সামনেই মারধর করেন অভিযুক্তরা। পরে তার কাছ থেকে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়।

নিহতের বাবা আমিরুল ইসলাম জানান, তাদের হাত থেকে ছেলেকে উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি বার বার আকুতি-মিনতি করলেও আমার ছেলেকে তারা ছাড়লো না। আমি তাদের পায়ে পর্যন্ত ধরেছি। তবুও তারা আমার কথা শুনিনি। সবশেষ আমার ছেলেকে মেরেই ফেলল। আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে দফায় দফায় নির্যাতন করে বুকের পাজর, দুই হাত ও পা ভেঙে দেয়। আমার ছেলের শরীরের এক ইঞ্চি পরিমাণ জায়গা নেই যেখানে আঘাত করেনি। আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আমি হত্যাকারীদের বিচার চাই। বিচার চাইতে হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে লাশ নিয়ে সরাসরি থানায় এসেছি।
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী শিপনের বাড়িতে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ সময় তার মা রোকেয়া আক্তার বলেন, শিপন ব্যবসায়িক কাজে এলাকার বাইরে রয়েছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে কাজ করছে পুলিশ।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page