হাজার বছরের সমৃদ্ধশালী সংস্কৃতির উত্তরাধিকারী আমরা। খাদ্যরসিক বাঙালি প্রাচীনকাল থেকে প্রধান খাদ্যের পরিপূরক মুখরোচক অনেক খাবার তৈরি করে আসছে। তবে পিঠা সর্বাধিক গুরুত্বের দাবিদার। শুধু খাবার হিসেবেই নয় বরং লোকজ ঐতিহ্য এবং নারীসমাজের শিল্প নৈপুণ্যের স্মারক রূপেও পিঠা বিবেচিত হয়। বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে আছে পিঠা। যখনই পিঠা-পায়েস, পুলি কিংবা নাড়ুর কথা উঠে তখনি যেন শীত ঋতুটি আমাদের চোখে ও মনে ভেসে ওঠে। প্রতি শীতেই গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে শুরু হয় পিঠা পুলির উৎসব।
বাংলার নারীসমাজ অতীতে শিক্ষাদীক্ষায় অনগ্রসর ছিল সত্য, কিন্তু স্বীকার করতে হবে এদেশের নারী সমাজ লোকজ শিল্পকর্মে অত্যন্ত নিপুণ এবং সুদক্ষ। এলাকা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন বা আলাদা রকম পিঠা তৈরি হয়ে থাকে। গ্রামাঞ্চলে সাধারণত নতুন ধান ওঠার পর থেকেই পিঠা তৈরির আয়োজন করা হয়।
শীতের সময় বাহারি পিঠার উপস্থাপন ও আধিক্য দেখা যায়। বাঙালির লোক ইতিহাস ও ঐতিহ্যে পিঠা-পুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে বহুকাল ধরে। এটি লোকজ ও নান্দনিক সংস্কৃতিরই বহি:প্রকাশ। যান্ত্রিক সভ্যতার এই ইট-কাঠের নগরীতে হারিয়ে যেতে বসেছে পিঠার ঐতিহ্য। সময়ের স্রোত গড়িয়ে লোকজ এই শিল্প আবহমান বাংলার অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠলেও এ যুগে সামাজিকতার ক্ষেত্রে পিঠার প্রচলন অনেকটাই কমে এসেছে।
তাই মুখরোচক খাবার হিসেবে পিঠার স্বাদ গ্রহণ ও জনসমক্ষে একে আরো পরিচিত করে তুলতে শহরে ও গ্রামে বিভিন্ন স্থানে শীতকে ঘিরে আয়োজন করা হয় পিঠা উৎসব। লোকজ এই ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার প্রয়াসে বাঙালির পিঠা পার্বণের আনন্দধারায় আজ গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার আফাজ উদ্দিন মেমোরয়িাল স্কুল এন্ড কলেজের উদ্যাগে পিঠা উৎসব ও বৃত্তি প্রাপ্ত ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে সনদ বিতরন করা হয় । এর আগে পায়রা উড়িয়ে এই পিঠা উৎসবের শুভ উদ্ভোধন করেন কালিয়াকৈর পৌর মেয়র মজিবুর রহমান এ সম|য় আরো উপস্থিত ছিলেন আফাজ উদ্দিন মেমোরয়িাল স্কুল এন্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোঃ জলিল উদ্দিন , আফাজ উদ্দিন মেমোরয়িাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ দিলওয়ার হোসেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাগণ জাকির হোসেন মোল্লা , আফাজ উদ্দিন মেমোরয়িাল স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির , জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আনন্দ কুমার দাস ,বেগম সুফিয়া মডেল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শামসুল আলম ,আক্কেল আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতোয়ার রহমান ,ভাউমান টালাবহ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারেজ আলী,চাপাইর বংশী বদন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন রানা ও আফাজ উদ্দিন মেমোরয়িাল স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালক মোঃ সাইদুর রহমান সোহাগ সহ স্কুলের ছাত্র ছাত্রী ও অভিবাভক বৃন্দ।
উৎসবস্থলের উন্মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠিত হচ্ছে নাচ, গান, আবৃত্তি ও পথনাটকসহ নানা ধরনের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। প্রাণের টানে ছুটে আসা সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে মুখরিত হয়ে ওঠেছে উৎসবস্থল। শীতের পিঠা-পুলিসহ নানা অঞ্চলের বৈচিত্র্যময় পিঠার পসরা সাজিয়ে উৎসবে আগত দর্শনার্থীদের মনোযোগ কেড়েছে পিঠা উৎসবে অংশ নেয় স্টলগুলো।