ঢাকার আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নে বাইদগাঁও গ্রামের ৯টি বাড়িতে একযোগে আগুন দিয়েছে দূর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এছাড়াও গাজীপুরের কালিয়াকৈর আটাবহ ইউনিয়নে চাতৈলভিটি ও দরবাড়ীয়া এলাকার দুটি বাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। থানা পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িগুলো পরিদর্শন করেছেন।
শনিবার দিবাগত রাত ২টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত আশুলিয়ার বাইদগাঁও এলাকার বাইদগাঁও এলাকার হযরত আলী, শওকত আকবর, আজিজুল হক, মৃত মফিজ উদ্দিন, শাহাবুদ্দিন, দিপু, আক্কাস প্রফেসর, মিয়াজ উদ্দিন এবং চাতৈলভিটি এলাকার নূর মোহাম্মদ ও দরবাড়ীয়া এলাকার আলেকের বাড়িতে আগুন দেয় দূর্বৃত্তরা।
ভুক্তভোগী হযরত আলী মাষ্টার জানান, তিনি আশুলিয়ার নাল্লাপোল্লা আলীম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক। তার বাড়ির গোয়াল ঘর থেকে রাত তিনটার দিকে ছাগলের চিৎকার শুনে তার ছোট মেয়ে জেগে উঠে এবং তারাও জেগে উঠেন। বড়িয়ে দেখেন তার গোয়াল ঘরে দাও দাও করে আগুন জ্বলছে। পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আগুন নেভান। আগুনে ওই ঘরে থাকা তার চারটি ছাগল দ্বগ্ধ হয়েছে। পরে ছাগলগুলো জবাই করা হয়। তারা এখন চরম আতঙ্কে রয়েছেন।
শওকত আকবর নামের আরেক ভুক্তভোগী জানান, তার স্ত্রী অসুস্থ্য থাকায় তিনি রাতে বাড়ান্দাতে পাইচারি করছিলেন। আশপাশের লোকজনের চিৎকার শুনে বের হন। বের হয়ে দেখেন তার দুইটা ঘরে আগুন জ্বলছে। পরে দ্রুত নিজস্ব মটর থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি দিয়ে আগুন নেভান। আগুনে তার ঘরে থাকা ট্রাঙ্কে জমির কাগজপত্র এবং খাটসহ নানা জিনিসপত্র পুড়ে যায়।
শুধু তার ঘরেই নয়, আশপাশের আজিজুল হকের ঘরের বারান্দায়, মৃত মফিজ উদ্দিনের বড় রান্না ঘরে, শাহাবুদ্দিন মাদবরের রান্না ঘরে, দিপুর কলোনীর একটি খালি কক্ষে, আক্কাস প্রফেসরের পরিত্যাক্ত একটি ঘরে, মিয়াজ উদ্দিনের গোড়া এবং চাতৈলভিটি এলাকার আলাল মাষ্টার ও নূরুর ধানের বেড়িতে আগুন দেয় দূর্বৃত্তরা। ঘটনাটি অত্যান্ত পরিকল্পিতভাবেই হয়তো কেউ ঘটিয়ে থাকতে পারে বলেও জানান তিনি।
মৃত . মফিজ উদ্দিনের স্ত্রী শেফালী বেগম জানান, তিনি তার একমাত্র ছেলে সজিবকে নিয়েই বাড়িতে থাকেন। অনেক কষ্ট করে মাটির টিন (মাইটা টিন) দিয়ে বড় করে একটি রান্না ঘর দেন। রাত তিনটার দিকে মানুষের চেচামেচিতে ঘুম ভাঙ্গে তার। ঘরের দড়জা খুলতে গেলে বাহির থেকে লক থাকায় খুলতে না পেরে জানালা দিয়ে বাহিরে তাকায়। দেখেন তার রান্না ঘরে দাও দাও করে আগুন জ্বলছে। পরে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ঘরের লক ঘুলে দেয় এবং নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আগুন নেভানো হয়।
বিষয়টি সন্ত্রাসী কার্যক্রম অবহিত করে ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িগুলো পরিদর্শন করেন আটাবহ ইউনিয়ন চেয়ার ম্যান শাকিল মোল্লা , শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম আজাহারুল ইসলাম সুরুজ বলেন,নিশ্চয় এটা পরিকল্পিত একটি ঘটনা। এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করতেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এব্যাপারে আশুলিয়া থানার এসআই নূর মোহাম্মদ জানান, তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন। এখন কিছু বলা যাচ্ছেনা। তবে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।