বিশেষ প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জাতিকে সামনে এগিয়ে নিতে সকল ধর্ম-বর্ণ ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাঁধে কাঁধ রেখে কাজ করে যেতে হবে। ধর্মের ভিত্তিতে আমরা দেশের কোনো নাগরিকের মধ্যে পার্থক্য করি না। আমরা একই বাগানের বিভিন্ন ফুল। আমরা সবাই বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক। এদেশ আমাদের সবার। আমরা মনে করি সত্যিকার অর্থেই কেউ যদি দেশকে ভালোবেসে থাকে, তারা প্রতিহিংসার রাজনীতিতে অগ্রসর হবে না। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দকে তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বাইরেও যদি আপনারা আপনাদের নিরাপত্তায় জামায়াতকে প্রয়োজন মনে করেন, যেকোনো সময়েই আমাদেরকে পাশে পাবেন, আমরা সর্বোচ্চ সামর্থ্য নিয়ে আপনাদের পাশে দাঁড়াবো।
তিনি আজ ১৮ আগস্ট রোববার বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য যথাক্রমে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও ডাঃ সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল ও ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহাকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির ও এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন, মুহাম্মদ কামাল হোসাইন। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর সুকমল বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ প্রচার সংঘের সহ-সভাপতি ভদন্ত স্বরূপানন্দ ভিক্ষু, মেজর (অব.) ডা. অজয় প্রকাশ চাকমা, বৌদ্ধ চ্যারিটি কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কল্যাণ জ্যোতি, বাসাবো বৌদ্ধ মন্দিরের সিনিয়র ধর্মযাজক ভদন্ত উ.সুনন্দ মহাথের, ধর্মযাজক ভদন্ত প্রজ্ঞাদর্শী ভিক্ষু, ধর্মযাজক মিল্টন কান্তি বড়ুয়া, সদস্য কাঞ্চন বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য নান্টু বড়ুয়া অনুজ, বাড্ডা বৌদ্ধ বিহারের মৈত্রী রতন ভিক্ষু, ধর্মযাজক জ্ঞানানন্দ থের, প্রজ্ঞারতন ভিক্ষু, ভিক্ষু জিহো প্রিয় ভান্তে, আশি রাখাইন ভিক্ষু, এস পি বারার প্রমুখ।
আমীরে জামায়াত বলেন, বিগত সরকার দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে এদেশে জামায়াতে ইসলামীর প্রতি অন্যায়, জুলুম ও নির্যাতন চালিয়ে এসেছে। জামায়াতের সাবেক দুই জন আমীর সহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিচারিক হত্যাকান্ড সংঘটিত করে একটি গোষ্ঠী জামায়াতের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে চেয়েছিল। জামায়াত নেতাকর্মীদের বাড়ি ঘর বুলডেজার দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছিল। জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে এই ১৬ বছরে হত্যা করা হয়েছে। অসংখ্য যুবককে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। হাজার হাজার মিথ্যা মামলায় লাখ লাখ জামায়াত নেতা কর্মীকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। দফায় দফায় জেলাখানা ও রিমান্ডে নিয়ে আমাদেরকে নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি রাজনীতিতে প্রতিশোধের কোনো স্থান নেই। রাজনীতি করতে হবে উদার এবং দরদ ভরা মন নিয়ে। সেই আলোকে সকল ধর্ম-বর্ণ, মতপার্থক্য দূরে রেখে আমরা সম্মিলিত ভাবে দেশ গঠনে অবদান রাখতে চাই।
প্রফেসর সুকোমল বড়ুয়া বলেন, জামায়াতে ইসলামীর আজকের এই উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। এর মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধি পাবে। আমাদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝি দূর হবে।সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সম্প্রতির বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো। তিনি রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে যেন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষের কোন অসুবিধা না হয় সেদিকে লক্ষ রাখার জন্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।