themeswala
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/swadhin/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের অন্যতম দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠে হাওর বেষ্টিত মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত হাওর আর পাহাড়ের সৌন্দর্যে ভরপুর সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা। একসঙ্গে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থানের সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে এই উপজেলায়। সারা বছরেই এই উপজেলার পর্যটন স্পটগুলো দেশ-বিদেশের সৌন্দর্য পিপাসুদের পদচারণায় মুখরিত থাকে।
তবে প্রধান দুটি উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় প্রকৃতিপ্রেমীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়। এখানে ঈদ উৎসব ছাড়াও ছুটির দিনে আসেন সহস্রাধিক পর্যটক। এই ঈদেও পর্যটকদের আগমনে মুখরিত হবে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা।
মনের প্রশান্তির জন্য ও ঈদের ছুটি কাটাতে পর্যটকদের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য এ উপজেলায় রয়েছে, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি টাংগুয়ার হাওর, ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্প বর্তমানে শহীদ সিরাজ লেক (নীলাদ্রী লেক), সীমান্ত ঘেঁষা ৩শ’ ফুট উচ্চতার বারেক টিলা, এর সঙ্গেই রূপের নদী যাদুকাটা ও এশিয়ার সর্ব বৃহৎ জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগান।
এ ছাড়াও রয়েছে ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্প উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে ট্যাকেরঘাট পাহাড়ি ছড়া, রাজাই ঝর্ণা, লাকমা ছড়া, লালঘাট ছড়া, লালঘাট ঝর্ণা, হলহলিয়ায় হাবেলি রাজবাড়ি, মুক্তিযুদ্ধের ৪নং সেক্টরের ৫-নং সাব সেক্টরের ট্যাকেরঘাটের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ, হজরত শাহ আরেফিন (রহ:) এর আস্থানা, ওপারের মেঘালয় পাহাড়ে হজরত শাহ আরেফিন (রহ:)থর ইবাদত খানার পাহাড়ি গুহা সঙ্গে ঝর্ণা, রাজারগাঁও অদ্বৈত প্রভুর আখড়াবাড়ি, গড়কাটি ইসকন মন্দির।
তবে বর্ষায় সবার আকর্ষণ টাংগুয়ার হাওর। এই সময় হাওর তার আসল সৌন্দর্যে সাজে। ‘নয় কুড়ি কান্দা ছয় কুড়ি বিলথ হিসেবে পরিচিত ও জীববৈচিত্র্যে ভরপুর টাংগুয়ার হাওর। এক দিকে মেঘালয় পাহাড় অন্য দিকে সারি সারি হিজল ও করচগাছে সমাদৃত বিশাল বিস্তৃত জলরাশি মনে হয় এ যেন একটি সাগর। বর্ষায় হাওর সহ সবকটি পর্যটনস্পট ঘুরার জন্য সহজ ও আরামদায়ক যানবাহন হচ্ছে নৌকা বা হাউজবোট। নৌকায় ভ্রমণ অন্য সব ভ্রমণ থেকে একেবারেই আলাদা। এই সময় টাংগুয়ার হাওরসহ পর্যটনস্পট গুলোকে কেন্দ্র করে শত শত ইঞ্জিন চালিত ছোট- বড় নৌকা বা হাউজবোট ব্যবস্থা রয়েছে।
তাহিরপুরে আগত পর্যটকরা সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে নৌকায় উঠে দুপুর ২টার মধ্যে টাংগুয়ায় পৌঁছে যায়। সেখানে হাওরের সচ্ছ পানিতে গোসল করেন তারা। গোসেল শেষে দুপুরের খাবার খেয়ে থাকেন হাওরেই। এরপর বিকেলের দিকে নিরাপদ রাত্রিযাপনের জন্য নৌকা নিয়ে যাওয়া হয় ট্যাকেরঘাট শহীদ সিরাজ লেক বা নীলাদ্রী লেক পাড়ে। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে শহীদ সিরাজ লেক বা নীলাদ্রী লেক ও সাথে বাংলাদেশ সীমান্তে থাকা ছোট ছোট পাহাড়ে উঠে সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় মেঘালয়ের। এ ছাড়াও হাতে সময় থাকলে নীলাদ্রীর পড়ে থাকা মোটরসাইকেলে করে বারেক টিলা, রূপের নদী যাদুকাটা ও শিমুল বাগানসহ সবকটি পর্যটনস্পট ঘুরা যায় সহজেই।
তরঙ্গ বিলাশ নৌকার মাঝি জানে আলম জানু বলেন, বর্ষায় নৌকায় আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য পর্যটকদের পদচারণা বৃদ্ধি পায়। তবে ঈদ আসলে পর্যটকদের চাপ আরও বেড়ে যায়। আশা করছি দিন ভালো থাকলে এই ঈদেও অনেক পর্যটক আসবে। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ হাউজ বোট/নৌকা ঈদের দিন থেকেই বুকিং হয়ে গেছে। ঈদ পরবর্তী সপ্তাহ-দশ দিন পর্যটকদের চাপ থাকবে।
উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আলমগীর খোকন বলেন, সারা বছরেই তাহিরপুরের পর্যটনস্পট গুলোতে দেশ বিদেশের অনেক পর্যটক আসেন। তবে বর্ষায় ছুটির দিনে বছরের প্রধান দুটি উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় প্রকৃতিপ্রেমীদের মিলন মেলায় পরিণত হয় এ উপজেলা। এখানে ঈদ উৎসব ছাড়াও ছুটির দিনে আসেন শত শত পর্যটক। উপজেলায় আগত পর্যটকদের সর্বাত্মক সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো কাজ করছে।
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন বলেন, তাহিরপুরে সারা বছরেই পর্যটক আসেন। আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বক্ষণিক নজরদারি রয়েছে। ঈদে পর্যটকদের উপস্থিতি বাড়বে। ঈদে প্রত্যেকটা পর্যটনস্পটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আলাদা নজরদারি থাকবে।
তাহিরপুরে আসতে হলে ঢাকা থেকে সড়ক পথে সুনামগঞ্জ জেলা শহরে আসতে হবে। ফকিরাপুল, সায়দাবাদ থেকে শ্যামলী পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, এনা পরিবহন ও মামুন পরিবহনের বাসগুলো সুনামগঞ্জ আসে। নন এসি বাসের ভাড়া পড়বে ৬৫০-৮৫০ টাকা। বাসে সুনামগঞ্জ পৌঁছাতে ৬/৭ ঘণ্টার মতো সময় লাগবে।
সুনামগঞ্জ নেমে সুরমা নদীর ওপর নির্মিত আব্দুজ জহুর ব্রিজের কাছে লেগুনা, সিএনজি অথবা মোটরবাইকে করে তাহিরপুরে আসা যায়। সময় লাগবে প্রায় এক ঘণ্টা। তাহিরপুরে নৌকা ঘাট থেকে আকার ও সামর্থ্য অনুযায়ী ইঞ্জিন চালিত নৌকা বা হাউজবোট ভাড়া করতে হবে। তবে হাউজবোট ভাড়া করতে হলে আগে থেকেই বুকিং করতে হয়। হাউজবোটে ভ্রমণ করতে চাইল আপনার কাজ হবে শুধু সুনামগঞ্জ বা তাহিরপুর পৌঁছানো। এরপর ভ্রমণের সব দায়িত্ব হাউজ বোটের। হাউজবোট সুনামগঞ্জ শহরের সাহেব বাড়ি ঘাট থেকে ছাড়বে নাকি তাহিরপুর থেকে ছাড়বে তা আগে থেকেই জেনে নিতে হবে। সুনামগঞ্জের ঘাট থেকে হাউজবোটে উঠলে টাঙ্গুয়া যেতে দুই ঘণ্টা হাউজবোটে জার্নি করতে হবে।