বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা তদন্ত করতে ঢাকায় আসা কলকাতার তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন ডিবি কর্মকর্তারা। এরপর রাত ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ডিবি কর্মকর্তা হারুন।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, চার সদস্যের ভারতীয় পুলিশের প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয় আসে। সেখানে তারা এ হত্যাকাণ্ড জড়িত যে তিনজন বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এছাড়া তারা কলকাতায় যে দুজন গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের তথ্য বাংলাদেশের তদন্তকারীদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন।
এব্যাপারে জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, আমরা যেসব তথ্য গণমাধ্যমকে জানিয়েছি, সেগুলো তারা জেনেছেন। আমাদের হাতে আটক যারা হত্যায় জড়িত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তারা যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সেটি যেমন আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন, তেমনি কলকাতা পুলিশের প্রতিনিধি দলের সঙ্গেও স্বীকার করেছেন। তারা সেটা শুনেছেন।
হারুন অর রশীদ আরও বলেন, ভারতীয় পুলিশ যে আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে তার মাধ্যমে চেষ্টা করছে এমপির মরদেহ কোথায় ফেলেছেন তা বের করতে। উভয় দেশে আটকদের তথ্যের ভিত্তিতে তারা খুব শিগগিরই হত্যার শিকার সংসদ সদস্য আনারের মরদেহ বা মরদেহের বিভিন্ন অংশ উদ্ধারে সক্ষম হবেন। আমরা আশা করছি সেটা তারা পারবেন।
এই হত্যাকাণ্ডে ভারতে কেউ জড়িত আছে কি না, জানতে চাইলে উত্তর এড়িয়ে যান হারুন অর রশীদ।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল আজীম গত ১২ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে কলকাতায় তার পারিবারিক বন্ধু ও কলকাতার স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাসায় যান। পরের দিন, ১৩ মে চিকিৎসক দেখাতে হবে জানিয়ে দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে গোপালের বাড়ি থেকে বের হন আনোয়ারুল। সন্ধ্যায় ফিরবেন বলেও জানান তিনি। পরে বিধান পার্কের কাছে কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে থেকে ট্যাক্সিতে উঠেছিলেন তিনি।
চলে যাওয়ার পর সন্ধ্যায় আজিম তার বন্ধু গোপালকে জানান, তিনি দিল্লি যাচ্ছেন এবং সেখানে পৌঁছে তাকে ফোন করবেন। পরে তার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন জানিয়ে বন্ধু গোপালকে ফোন না দেওয়ার জন্য বলেছিলেন। গত ১৫ মে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো বার্তায় এমপি আনোয়ারুল গোপালকে বলেন, তিনি দিল্লি পৌঁছেছেন এবং ভিআইপিদের সাথে আছেন। তাকে ফোন করার দরকার নেই। একই বার্তা পাঠিয়ে দেন বাংলাদেশে তার ব্যক্তিগত সহকারী রউফের কাছেও।
১৭ মে আনোয়ারুলের পরিবার তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে গোপালকে ফোন করেন। ওই সময় তারা গোপালকে বলেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না তারা। পরিবারের পক্ষ থেকে ওই দিনই ঢাকায় থানায় অভিযোগ করা হয়। এরপর থেকে এমপি আনোয়ারুলের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।