সিনিয়র রিপোর্টার:
সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের গুরুত্ব অনুধাবন করে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বাজেটে ৫’শ বা ১’শ মিলিয়ন ডলার সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের জন্য বরাদ্দ রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করা হবে। তিনি বলেন, স্মার্টআপদের জন্য যেভাবে বাজেটে ১০০ কোটি টাকা রাখা হয়েছিল, ঠিক একইভাবে সেমিকন্ডাক্টর শিল্প দেশে কিংবা বিদেশি কেউ যদি আসে, বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চায়, সাথে আমরাও যেন ৫’শ মিলিয়ন ডলার দিতে পারি। সেজন্য একটা ম্যাচিং ফান্ড দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
প্রতিমন্ত্রী আজ রাজধানীর চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-অডিটরিয়ামে “Unleashing the Potential of Semiconductor Industry in Bangladesh” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, ‘উল্কাসেমি, নিউরাল সেমিকন্ডাক্টর লিমিটেড, প্রাইম সিলিকন ও ডিএসআই চিপ উৎপাদন ও নকশা করে বছরে ৫ মিলিয়ন ডলার আয় করছে। কিন্তু এখনো দেশে চিপ ফ্রেব্রিকেশনের কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি। চিপ অ্যাসেম্বিলিং, টেস্টিং এবং প্যাকেজিং এরও কোনো সুযোগ এখানে নেই। বিশ্বে সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বাজার রয়েছে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে এক ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে দেশে টেকনোলজি বেইজড ইকোসিস্টেম তৈরি হয়েছে। এই ফাউন্ডেশনের উপর ভিত্তি করে আগামী ১৭ বছরে ৫০ বিলিয়ন ডলার এক্সপোর্ট করার যে টার্গেট, সেখানে দেশের মেধাবী প্রকৌশলীরা তাদের কাজের মাধ্যমে দেশে উৎপাদিত ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ চিপ রফতানি করে ১০ বিলিয়ন ডলার সেমিকন্ডাক্টর শিল্প থেকে রপ্তানি করা সম্ভব।
পলক বলেন, দেশে চিপ ডিজাইনিং ক্যাপাসিটি বিল্ডআপ করার লক্ষ্যে এনহান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি প্রকল্পের অধীনে ফ্রন্টিয়ার (অগ্রসর) টেকনোলজিতে ১ লাখ তরুণ-তরুণীকে দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটসহ দেশের ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের শিক্ষিত তরুণদের মাইক্রো চিপস ডিজাইনিং, আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স, মেশিন লার্নিং, ডেটা অ্যানালেটিক্স, ক্লাউড কম্পিটিং প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তোলার জন্য হায়ার অ্যান্ড ট্রেনিং প্রোগ্রামের আওতায় প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, উদ্ভাবন ও গবেষণার বিকাশে সরকার দেশের ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০টি রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা করছে। ইতোমধ্যে ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর শেষে গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এমআইটি’র সাথে আইসিটি ডিভিশনের অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ১০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে বুয়েটের ক্যাম্পাসে আমরা একটা অত্যাধুনিক ন্যানো ল্যাব স্থাপন করেছি। দেশে সাহসী ও মেধাবী উদ্যোক্তা দরকার উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নতুন কোন স্টার্টআপ ডিজাইনিং ফার্মকে স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড থেকে ইক্যুইটি ইনভেস্ট-এ ১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার সক্ষমতা রয়েছে। ইতোমধ্যে ৫০টির মতো কোম্পানিতে ১২০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে আরো একশ কোম্পানিতে ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে।
অনুষ্ঠানে চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি সভাপতি আশরাফ আহমেদ এর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বুয়েটের ন্যানোমেটেরিয়ালস অ্যান্ড সিরামিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর এ এস এম এ হাসিব, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিএসএম জাফরউল্লাহ।