বিশেষ প্রতিনিধি:
রাজধানীতে ‘বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে বিপর্যস্ত অঞ্চলসমূহে মেয়েদের শিক্ষা প্রসারে সম্মিলিত উদ্যোগ’ শীর্ষক জাতীয় পর্যায়ের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে চরাঞ্চল, হাওর, উপকূলীয় অঞ্চলের মেয়েদের শিক্ষার প্রসারে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পপি, ডিআরআরএ এবং সিডিএফের যৌথ আয়োজনে মালালা ফান্ড বাংলাদেশের সহযোগিতায় আজ সোমবার বেলা ১১টায় রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে বিপর্যস্ত অঞ্চলসমূহে মেয়েদের শিক্ষা প্রসারে সম্মিলিত উদ্যোগ’ শীর্ষক অনুষ্ঠিত জাতীয় পর্যায়ের সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, আমাদের মতো নিম্ন মধ্যবিত্ত দেশে নারীর অবস্থান ভালো। আমাদের দক্ষিণ এশিয়ায় অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীরা পিছিয়ে। বিদেশি অর্থায়নে নয়, নিজেদের উন্নয়ন নিজেরাই করতে হবে। যদিও আমাদের সম্পদের অভাব আছে। তারপরও নারী শিক্ষায় সরকার কাজ করছে। আমাদের এখনই ঠিক করতে হবে আমরা কোন ধরনের উন্নয়ন চাই, অবকাঠামো উন্নয়ন আগে করব নাকি মানুষের মৌলিক চাহিদা আগে। গ্রামের দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করে বেশিরভাগ মানুষ। তাদের উন্নয়নের ধারায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি প্রফেসর আতিউর রহমান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সংকট এই মুহূর্তের সংকট। সারা বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের আঘাত হানছে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের দায় খুব কমই রয়েছে। কিন্তু বৈশ্বিক এই দীর্ঘমেয়াদি সংকটের বিরূপ প্রভাব আমাদের ওপর অনেক বেশি। এর দায় আমাদের বেশি বহন করতে হচ্ছে। কারণ কম বয়সী মেয়েরা পানি বহনের কাজ করে। জলবায়ু পরিবর্তনে মেয়েদের শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। আগামীতে এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষা হলো আমাদের সভ্যতায় ওঠা মহাসড়ক। প্রাথমিক শিক্ষা হলো আমাদের সেই মহাসড়কে ওঠার মেঠো পথ। আমরা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষায় যাব সেই মেঠোপথ ধরেই। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, সবার জন্য শিক্ষা এ জন্য প্রয়োজন, এই শিক্ষা না পেলে একজন আরেকজনের সঙ্গে মতবিনিময় করতে পারব না। উন্নয়নের সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফরম অংশগ্রহণ। সরকার, সমাজ এবং সংগঠন মিলে যে পার্টনারশিপ গড়ে উঠেছে এটি আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে মালালা ফান্ড বাংলাদেশের ইন-কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ মোশারফ তানসেন বলেন, বর্ষার সময়ে হাওর ও চরাঞ্চলের মেয়েদের বিদ্যালয়ে যাওয়া ক্ষতির কারণ হতে পারে। কিশোরগঞ্জের নিকলিতে মেয়েরা তিনটি নদী পার হয়ে বিদ্যালয়ে পড়তে আসে। এখানকার বিদ্যালয়গুলো স্যানিটেশন ব্যবস্থাপনা খুবই অপ্রতুল। একটি গবেষণায় জানা যায়, কেবল ৩৪ শতাংশ বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্যানিটেশন ব্যবস্থা রয়েছে। বাকি বিদ্যালয়ে স্যানিটেশনের ব্যবস্থা নেই।
পপির নির্বাহী পরিচালক মুর্শেদ আলম সরকারের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিআরআরএ’র নির্বাহী পরিচালক ফরিদা ইয়াসমিন, বিশেষ বক্তব্য দেন সিডিএফের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুল আউয়াল, বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মাইক্রোক্রেডিট এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফসিউল্লাহ প্রমুখ।