নিজস্ব প্রতিবেদক:অস্ট্রেলিয়াকে তিনশর আগে থামিয়ে লক্ষ্যটা নাগালে রাখলেন ইংল্যান্ডের বোলাররা। পরে দাভিদ মালান ও বেন স্টোকসের ব্যাটে জাগল আশা। কিন্তু দলকে কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় নিয়ে যেতে পারলেন না কেউই। প্যাট কামিন্স, অ্যাডাম জ্যাম্পাদের দারুণ বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে ইংলিশদের হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।
আহমেদাবাদে শনিবার পাঁচবারের রেকর্ড চ্যাম্পিয়নদের জয় ৩৩ রানে।
মার্নাস লাবুশেনের ফিফটিতে অস্ট্রেলিয়া করে ২৮৬ রান। তিন ম্যাচ পর দুইশ পেরিয়ে ইংল্যান্ড গুটিয়ে যায় ২৫৩ রানে।সাত ম্যাচে পাঁচ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে অস্ট্রেলিয়া। তাদের সমান ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে ভারত ও ১২ পয়েন্ট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সেমি-ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত হয়েছে আগেই।৮ পয়েন্ট করে নিয়ে নিউ জিল্যান্ড চারে, পাকিস্তান পাঁচে, আফগানিস্তান ছয়ে আছে। নিউ জিল্যান্ড ও পাকিস্তান একটি করে ম্যাচ বেশি খেলেছে।ইংল্যান্ডের দুঃস্বপ্নের পথচলা দীর্ঘায়িত হলো আরও। টানা পঞ্চম হারে পয়েন্ট টেবিলে তলানিতেই পড়ে রইল গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা। প্রথম রাউন্ড থেকে তাদের বিদায়ও নিশ্চিত হয়ে গেল আনুষ্ঠানিকভাবে।ব্যাটিংয়ে ১৯ বলে ২৯ রানের ক্যামিও ইনিংসের পর হাত ঘুরিয়ে ২১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার এবারের নায়ক লেগ স্পিনার জ্যাম্পা।বোলিংয়ে সুরটা বেঁধে দেন অবশ্য মিচেল স্টার্ক। ইনিংসের প্রথম বলে তিনি ফিরিয়ে দেন জনি বেয়ারস্টোকে। লেগ স্টাম্পের ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ইংলিশ ওপেনার।মার্কাস স্টয়নিসের হাতে একবার জীবন পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি জো রুট। নতুন বলেই স্টার্কের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি।১৯ রানে ২ উইকেট হারানোর ধাক্কা ইংল্যান্ড সামলে ওঠে মালান ও স্টোকসের ব্যাটে। দুজনে গড়েন ৮৪ রানের জুটি। ফিফটি ছুঁয়েই আউট হয়ে যান মালান।আসর জুড়ে ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী থাকা অধিনায়ক জস বাটলার হতাশ করেন আরও একবার। জ্যাম্পাকে বেরিয়ে এসে খেলে উইকেট উপহার দিয়ে আসেন তিনি।পঞ্চম উইকেটে ইংল্যান্ড আরেকটি পঞ্চাশোর্ধ (৬১) জুটি পায় স্টোকস ও মইন আলির সৌজন্যে। কিন্তু ফিফটির পর ইনিংস লম্বা করতে পারেননি স্টোকসও (৯০ বলে ৬৪)। দুই থিতু ব্যাটসম্যানকেই ড্রেসিংরুমের পথ দেখান জ্যাম্পা। মাঝে লিয়াম লিভিংস্টোন দাঁড়াতেই পারেননি।লেজের ব্যাটসম্যানের দৃঢ়তায় পরাজয়ের ব্যবধানই কেবল কমাতে পারে ইংলিশরা।নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৮ রানের মধ্যে ট্রাভিস হেড ও ডেভিড ওয়ার্নারকে হারায় অস্ট্রেলিয়া। নতুন বলে দুজনকেই ফেরান পেসার ক্রিস ওকস।তৃতীয় উইকেটে ৭১ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন স্টিভেন স্মিথ ও লাবুশেন। শেষ পর্যন্ত এটিই হয়ে থাকে ইনিংসের সেরা জুটি।স্মিথকে (৫২ বলে ৪৪) ফিরিয়ে ওই জুটি ভাঙেন লেগ স্পিনার আদিল রশিদ। নিজের পরের ওভারে তিনি বিদায় করে দেন জশ ইংলিসকেও।পরে আর একটিই পঞ্চাশোর্ধ জুটি পায় অস্ট্রেলিয়া। পঞ্চম উইকেটে লাবুশেন ও ক্যামেরন গ্রিনের জুটিতে আসে ৬১ রান।শতকের সম্ভাবনা জাগিয়ে লাবুশেন থামেন ৭১ রানে। তার ৮৩ বলের ইনিংস গড়া ৭ চারে। গ্রিন ৫২ বলে করেন ৪৭ রান।শেষ দিকে জ্যাম্পার ক্যামিওতে ২৮৬ পর্যন্ত যেতে পারে অস্ট্রেলিয়া। পরে বোলিংয়েও আলো ছড়িয়ে ম্যাচের সেরা তিনিই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ৪৯.৩ ওভারে ২৮৬ (হেড ১১, ওয়ার্নার ১৫, স্মিথ ৪৪, লাবুশেন ৭১, ইংলিস ৩, গ্রিন ৪৭, স্টয়নিস ৩৫, কামিন্স ১০, স্টার্ক ১০, জ্যাম্পা ২৯, হেইজেলউড ১*; উইলি ১০-১-৪৮-১, ওকস ৯.৩-০-৫৪-৪, উড ১০-০-৭০-২, লিভিংস্টোন ৬-০-৪২-১, মইন ৪-০-২৮-০, রশিদ ১০-০-৩৮-২)
ইংল্যান্ড: ৪৮.১ ওভারে ২৫৩ (বেয়ারস্টো ০, মালান ৫০, রুট ১৩, স্টোকস ৬৪, বাটলার ১, মইন ৪২, লিভিংস্টোন ২, ওকস ৩২, উইলি ১৫, রশিদ ২০, উড ০*; স্টার্ক ১০-০-৬৬-২, হেইজেলউড ৯.১-১-৪৯-২, কামিন্স ১০-১-৪৯-২, জ্যাম্পা ১০-০-২১-৩, হেড ৫-০-২৮-০, স্টয়নিস ৪-০-৩৪-১)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৩৩ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: অ্যাডাম জ্যাম্পা