বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৯ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি
২৯ বছর ক্ষমতায় থেকে তারা দেশেকে কিছুই দিতে পারেনি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
/ ৭৪ Time View
Update : শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৩, ৭:১০ পূর্বাহ্ন

বিশেষ প্রতিনিধি:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২৯ বছর যারা ক্ষতমায় ছিলেন তারা দেশের মানুষকে কিছুই দিয়ে যেতে পারেননি। আমরা এ দেশের মানুষকে সব দিয়েছি। আমরা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে দেখি বিমানবন্দরে বোর্ডিং ব্রিজ ছিল না, পার্কিং ছিল না।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার (৭ অক্টোবর) শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ এর উদ্বোধন উপলক্ষ্যে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আমি যখন সরকারে আসি তখন আমাদের বিমানবন্দরের কোনো বোডিং ব্রিজ ছিল না, পার্কিং ব্যবস্থা ছিল না, কিছুই ছিল না। আমরা সরকারে এসে বিমানবন্দরের উন্নয়নের উদ্যোগ নিই। চট্টগ্রাম ও সিলেট, এ দুই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও আমরা নির্মাণ করি। সঙ্গে শাহজালাল বিমানবন্দরের উন্নয়নের প্রকল্প গ্রহণ করি। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল, এ সময়ে বিমানবন্দরের উন্নয়নের যাত্রা শুরু হয়। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, যদি পারেন তাহলে ১৯৯৬ সালের আগ পর্যন্ত কী উন্নয়ন হয়েছিল, সেটি একটু দেখবেন।

‘যোগাযোগ ব্যবস্থা মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একান্ত অপরিহার্য। আধুনিক যুগের নৌপথ, সড়কপথ ও রেলপথের সঙ্গে সঙ্গে আকাশ-পথও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে, বিদেশের সঙ্গে আমাদের যে যোগাযোগ, সেই যোগাযোগের মূল বাহন হচ্ছে বিমান। অর্থাৎ আকাশযাত্রাটা হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এটিকে গুরুত্ব দিই।’

সরকার-প্রধান বলেন, আমাদের বিমানবন্দর যাতে আরও আধুনিক এবং এতে আরও পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা যুক্ত করা যায়, সেজন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। কারণ, আমাদের দেশ থেকে যেয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রবাসীরা বসবাস করেন। তারা বিভিন্ন দেশে কাজ করেন। আমাদের রেমিট্যান্স পাঠান। তারাও যাতায়াত করে। তাদের সুবিধাটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।

 

এর আগে সকাল ১০টা ১০ মিনিটে শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল এলাকায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় দলীয় দেশাত্মবোধক গানের সঙ্গে সঙ্গে মনোজ্ঞ নৃত্য পরিবেশন করে তাকে স্বাগত জানানো হয়। পরে তিনি অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত টার্মিনাল-৩ এর বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমানসহ বেবিচক ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পাঁচ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটারের তৃতীয় টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি প্লেন রাখার অ্যাপ্রোন (প্লেন পার্ক করার জায়গা) করা হয়েছে। মডার্ন টার্মিনাল বিল্ডিংয়ে দুই লাখ ৩০ হাজার স্কয়ার মিটারের বিল্ডিংয়ের ভেতরে থাকবে পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য ও অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তির ছোঁয়া। এতে রয়েছে বেশ কয়েকটি স্ট্রেইট এস্কেলেটর।

নতুন এ টার্মিনালে যাত্রীদের ব্যাগের জন্য সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি ও ব্যাংককের সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরের মতো অত্যাধুনিক তিনটি আলাদা স্টোরেজ এরিয়া করা হয়েছে। রেগুলার ব্যাগেজ স্টোরেজ, লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড এবং অড সাইজ (অতিরিক্ত ওজনের) ব্যাগেজ স্টোরেজ। যাত্রীদের স্বাভাবিক ওজনের ব্যাগেজের ১৬টি রেগুলার ব্যাগেজ বেল্ট থাকবে টার্মিনালটিতে। অতিরিক্ত ওজনের (অড সাইজ) ব্যাগেজের জন্য স্থাপন করা হয়েছে আরও চারটি পৃথক বেল্ট।

করোনার মধ্যে এক দিনের জন্যও বন্ধ হয়নি নির্মাণকাজ যে সৌন্দর্য থেকে চোখ ফেরানো দায় অত্যাধুনিক এ টার্মিনাল ভবনে থাকবে ১০টি সেলফ চেক-ইন কিওস্ক (মেশিন)। এগুলোতে নিজের পাসপোর্ট এবং টিকিটের তথ্য প্রবেশ করালে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসবে বোর্ডিং পাস ও সিট নম্বর। এরপর নির্ধারিত জায়গায় যাত্রী তার লাগেজ রেখে দেবে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে লাগেজগুলো এয়ারক্রাফটের নির্ধারিত স্থানে চলে যাবে। তবে নির্ধারিত ৩০ কেজির বেশি ওজনের ব্যাগেজ নিয়ে এখানে চেক-ইন করা যাবে না। সেসব যাত্রীদের জন্য আরও ১০০টি চেক-ইন কাউন্টার থাকবে এ টার্মিনালে।

নতুন এ টার্মিনালে যাত্রীদের ব্যাগের জন্য সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি ও ব্যাংককের সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরের মতো অত্যাধুনিক তিনটি আলাদা স্টোরেজ এরিয়া করা হয়েছে। রেগুলার ব্যাগেজ স্টোরেজ, লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড এবং অড সাইজ (অতিরিক্ত ওজনের) ব্যাগেজ স্টোরেজ। যাত্রীদের স্বাভাবিক ওজনের ব্যাগেজের ১৬টি রেগুলার ব্যাগেজ বেল্ট থাকবে টার্মিনালটিতে।

টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ করছে স্যামসাং গ্রুপের কনস্ট্রাকশন ইউনিট স্যামসাং কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ট্রেডিং (সিঅ্যান্ডটি) কর্পোরেশন। প্রতিষ্ঠানটির নির্মিত স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে বুর্জ খলিফা, পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, তাইপে ১০১, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের ৪ নম্বর টার্মিনাল, দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচেওন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও আবুধাবির ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক। এছাড়াও টার্মিনালের ভেতরের ভবনটির নকশা তৈরি করেছেন বিখ্যাত স্থপতি রোহানি বাহারিন। তিনি সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্টের টার্মিনাল-৩, চীনের গুয়াঞ্জুর এটিসি টাওয়ার ভবন, ভারতের আহমেদাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ইসলামাবাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের নকশা তৈরি করেন।

যোগাযোগ ব্যবস্থা মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একান্ত অপরিহার্য। আধুনিক যুগের নৌপথ, সড়কপথ ও রেলপথের সঙ্গে সঙ্গে আকাশ-পথও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে, বিদেশের সঙ্গে আমাদের যে যোগাযোগ, সেই যোগাযোগের মূল বাহন হচ্ছে বিমান। অর্থাৎ আকাশযাত্রাটা হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এটিকে গুরুত্ব দিই।

২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক। নির্মাণ কাজে অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। বৃহৎ এই থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পটির ব্যয় প্রথমে ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে অবশ্য প্রকল্প ব্যয় ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page