রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি
সরবরাহ পর্যাপ্ত তবুও বাড়ছে পণ্যের দাম
Update : শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৩, ৫:২১ অপরাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রত্যেকটি পণ্যের সরবরাহ পর্যাপ্ত। থরে থরে সাজিয়ে বিক্রি করছে বিক্রেতা। তবুও বৃষ্টির অজুহাতে বাড়ানো হয়েছে দাম। পরিস্থিতি এমন- কেজিপ্রতি ৬০ টাকার নিচে মিলছে না কোন সবজি। কিছু সবজির দাম ১০০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে।

পাশাপাশি সাত দিনের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা বাড়িয়ে ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে নতুন করে কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়ে পেঁয়াজের দামও সেঞ্চুরির পথে হাঁটছে। আলু বিক্রি হচ্ছে ফের ৫০ টাকায়। আর মাছের দামও বাড়ানো হয়েছে হু হু করে। ফলে শুক্রবার ছুটির দিন বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে এসে ক্রেতার নাভিশ্বাস উঠছে।

খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজধানীর বাজারে প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, যা সাত দিন আগেও ৪৫-৫০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি শালগম বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, যা আগে ৬৫-৭০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা। যা আগে ৬৫-৭০ টাকা ছিল। এছাড়া কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে গাজর ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি শিম ২০০, বেগুন ৯০-১০০, টমেটো ১২০, শসা ৭০, করলা ১০০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০-১০০ টাকা, প্রতি কেজি কাকরোল ৮০, পটোল ৭০, লতি ৮০ ও প্রতি কেজি ঢেঁড়স ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর নয়াবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, বর্তমানে ঢাকায় সবজির সরবরাহ একেবারে কম। আড়ত থেকে অনেকে পণ্য আনতে পারেনি। তার মতে, কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টির কারণে এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। তাই বেড়েছে দাম। ফলে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। সঙ্গে পরিবহণ খরচ ও লাইনম্যানের চাঁদা, সব মিলে বেশি দামেই ক্রেতার কাছে সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে।

জানতে চাইলে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, বিক্রেতারা সব সময় পণ্যের দাম বাড়াতে সুযোগ খোঁজে। অতি মুনাফা করতে মরিয়া সব শ্রেণির ব্যবসায়ী। এবার বৃষ্টির অজুহাত দিয়ে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। এই অসাধুতা দেখতে সরকারের একাধিক সংস্থা আছে। এসব দেখা তাদেরই দায়িত্ব। কিন্তু ঠিক মতো দেখা হচ্ছে না। ফলে বিক্রেতাদের যে কোনো অজুহাতে ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই সময় এসেছে, সংশ্লিষ্টদের এখনই বাজার ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম ঢেলে সাজাতে হবে। তা না হলে দেশের ভোক্তারা ঠকেই যাবে।

এদিকে কয়েক মাস ধরে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ডিম, আলু ও পেঁয়াজের মূল্য নিয়ে কারসাজি করছে। সম্প্রতি সেই চক্র অতি মুনাফা করতে প্রতি পিস ডিমের দাম সর্বোচ্চ ১৫-১৬ টাকায় নিয়ে ঠেকায়। আলুর কেজি ৫০ ও পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ১০০ টাকায় বিক্রি করে। ফলে মূল্য নিয়ন্ত্রণে ১৪ সেপ্টেম্বর প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা, প্রতি কেজি আলু ৩৫-৩৬ এবং পেঁয়াজের দাম ৬৪-৬৫ টাকা নির্ধারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু বাজারে সরকার নির্ধারিত দাম মানা হচ্ছে না। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দুই দফায় ১০ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে। তারপরও মূল্য সহনীয় করতে পারছে না জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ফলে ক্রেতার পণ্য তিনটি বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে।

রাজধানীর খুচরা বাজারের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা। যা গত সাত দিন আগে ৮০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা। যা আগে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতি হালি (৪ পিস) ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। এতে পিস হিসাবে মূল্য হয় ১২ টাকা ৫০ পয়সা। আর এক পিস কিনলে বাজার কিংবা এলাকার মুদির দোকানে ১৩ টাকা করে রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। যা সাত দিন আগেও ১৮০ টাকা ছিল।

রাজধানীর মালিবাগ কাঁচাবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা জালাল মোল্লা বলেন, কোনো উপলক্ষ্য পেলেই বিক্রেতারা পণ্যের দাম বাড়ায়। উৎসব এলে পণ্যের দামে নাজেহাল হতে হয়। এছাড়া কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। আর এই বৃষ্টির অজুহাতে বিক্রেতারা সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে গত মাসে পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের দাম নির্ধারণ করলেও এখন পর্যন্ত নির্ধারিত দামে কিনতে পারিনি। এর মধ্যে গত সাত দিনে এই পণ্যের দাম আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। যারা এই বিষয়ে দেখবে, তারা নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে। আর বাড়তি দামে পণ্য কিনে আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতার ঘুম হারাম হচ্ছে।

এদিকে প্রতি কেজি পাঙাশ ১৮০-২০০ টাকায় পাওয়া গেলেও শুক্রবার প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ২২০-২৫০। কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৬০ টাকা। এছাড়া বড় আকারের তেলাপিয়ার কেজি ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চাষের কই ও পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা, ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের চাষের রুই-কাতলার দাম হাঁকানো হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি। এক কেজির বেশি ওজনের হলে ৪০০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। এছাড়া ছোট আকারের ইলিশের কেজি ৬০০-৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর একই সময়ে ৪০০ টাকা ছিল। ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০০-১২০০ টাকা। আর এক কেজি সাইজের ইলিশের কেজি ১৫০০-১৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page