বিশেষ প্রতিনিধি:
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কীভাবে দেশের সীমানা পেরিয়ে বৈশ্বিক পর্যায়ে বিজনেস আউটসোর্সিং সহ এই খাতের নতুন বাজার খুঁজে সর্বোত্ত প্রযুক্তি সেবা দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে শনিবার রাজধানীর রূপসী বাংলার বলরুমে শুরু হলো পঞ্চম বিপিও সম্মেলন বাংলাদেশ।
এই সম্মেলন আগামীতে জেলা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা উঠে আসে। অনুষ্ঠানে বিভাগীয় জেলাপ্রশাসনদের মধ্যে সম্মাননা বিতরণ করা হয়। এছাড়াও বর্ষসেরা বিপিও ব্যক্তি এক হাতেই ডেটা এন্ট্রি করা নাজমুল হক মোল্যা। একইভাবে প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে ইগনাইট, সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেড ও জেনেক্স ইনফোসিস।
স্পীকার বলেন, দেশের তরুণ মেধাবীদের সম্পৃক্ত করতে হলে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে কার্যক্রম বিস্তৃত করতে হবে। সাধারণ মানুষের কাছে বিপিও-র সহজবোধ্য উপস্থাপন জরুরি। বিপিও থেকে দেশ ও জাতি কিভাবে লাভবান হতে পারে তা সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। বহির্বিশ্বের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ খাতে নারীদের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। তাদের দক্ষতাকে কাজে লাগাতে হবে। সোর্সিং বিয়ন্ড বর্ডার্স অর্থাৎ দেশের দক্ষ জনশক্তি সারা বিশ্বে সেবা প্রদানের মাধ্যমে উপার্জন করতে পারছে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করার দক্ষতা অর্জন অব্যাহত রাখতে হবে।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরিকল্পনায় আইটি সেক্টরের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। আইটি সেক্টরে তৈরি হওয়া মানবসম্পদকে কাজে লাগিয়ে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে।
এই অনুষ্ঠানে শিরীন শারমিন বলেন, আমাদের মানুষের দক্ষতা, মেধা ও শ্রমের মাধ্যমেই নতুন চ্যালেঞ্চ মোকাবেলা করা সম্ভব। আমাদের আইটি এক্ষেত্রে প্রমাণ দিয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কারিকুলামে তরুণদের জন্য হালনাগাদ প্রযুক্তি পাঠ সংযুক্তির জন্য ইউজিসি’র প্রতি আহ্বান জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার।
সভাপতির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, এআই আমার এখন নিত্য দিনের সঙ্গী। সে আমার ভাষাগত দূরত্ব ঘুচে দিয়েছে।
এক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের সঙ্গে ন্যাচারাল ইন্টিলিজেন্সের মধ্যে সমন্বয়ে সরকারের প্রত্যয়ের কথা জানান তিনি। বলেছেন, রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে স্মার্ট নাগরিক তৈরি করতে সনদ থেকে কর্মমুখী শিক্ষা নিশ্চিত করছি। প্রাথমিকে কোডিং শেখানোর মাধ্যমে সরকার এখন প্রবলেম সলভার তৈরি করছে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ভবিষ্যত স্মার্ট অর্থনীতি গড়ে তুলতে হলে স্মার্ট কর্মসংস্থানের বিকল্প নেই। এ জন্য সাইবার সিকিউরিটি, চিপ ডিজাইনিং, ব্লকচেইন, এআই এর মতো ভবিষ্যত প্রযুক্তিতে ১ লাখ দক্ষকর্মী গড়ে তুলতে শুরু করেছে। ইন্টারনেট মহাসড়ক প্রস্তুত করেছে। বিদ্যুতের সমস্যারও সমাধান হয়েছে। এর ফলে বিপিও খাতে ২০ লাখ কর্মসংস্থান সম্ভব হয়েছে। গত ৫-১০ বছরে যতগুলো হাইটেক ও সফটওয়্যার পার্ক থেকে বড় অংকের রপ্তানি আয় করা সম্ভব হচ্ছে। এখন দেশের ৫৭ বিশ্ববিদ্যালয়েই গবেষণা ও উদ্ভাবন ল্যাব তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। সহসাই আইএসপিএবি’র মাধ্যমে মধ্যে ১ লাখ ৯ হাজার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করতে পারবো।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে প্রথম বিভাগীয় সম্মেলনে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাপ্ত সহযোগিতার প্রশংসা করেন বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ ও একইসঙ্গে বিপিও খাতের অগ্রিম করপোরেট কর ২০৩১ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব দেন তিনি।
অন্যান্যের মধ্যে আইসিটি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিন, আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ মোস্তফা কামাল ও বাক্কো সাধারণা সম্পাদ তৌহিদ হোসেন বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও গনমাধ্যম কর্মীগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।