শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৮ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি
শহরে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অর্ধেকই নতুন দরিদ্র
/ ৪৫ Time View
Update : বুধবার, ১৭ মে, ২০২৩, ৩:৩৭ অপরাহ্ন

বিশেষ প্রতিনিধি:

করোনা মহামারীকালে দেশের শহুরে এলাকাগুলো নতুন দরিদ্রের আবির্ভাব ঘটে। গত বছর শহরে মোট দারিদ্রের ৫২ শতাংশই ছিল নতুন দরিদ্র। এক গবেষণার বরাত দিয়ে এমনই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)।

বুধবার (১৭ মে) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে বিআইডিএস রিসার্চ অ্যালমানাক ২০২৩ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে এই গবেষণার তথ্য প্রকাশ করেন সংস্থাটির মহাপরিচালক বিনায়ক সেন।

বিনায়ক সেন বলেন, গত বছর মোট দরিদ্রের প্রায় ৫০ শতাংশ নতুন দরিদ্র। যারা নিম্নমধ্যবিত্ত থেকে দরিদ্রের কাতারে নেমে গেছে। সংকটে থাকা এই শ্রেণির ওপর আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। করোনাপরবর্তী সময় দারিদ্র্য কমাতে আত্মকর্মসংস্থান বড় ভূমিকা রেখেছে। যাদের আর্থিক সঞ্চয় ছিল, তারা সেটি ভেঙে নিজের কর্মসংস্থানের জন্য কাজে লাগিয়েছেন। তা ছাড়া আধুনিক প্রযুক্তি, বিশেষ করে মোবাইলে আর্থিক সেবা বা এমএফএস আত্মীকরণ দারিদ্র্য কমিয়ে আনতে সহায়তা করেছে।

বিআইডিএস ২ হাজার ৪৬টি খানার ওপর জরিপ করে গবেষণাটি করেছে। এতে উল্লেখ করা হয়, করোনার আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালে দরিদ্র মানুষের মধ্যে আত্মকর্মসংস্থানের হার ছিল ৩৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। করোনার পর অর্থাৎ গত বছর সেটি বেড়ে ৩৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ হয়েছে। অন্যদিকে অতিদরিদ্র মানুষের মধ্যে করোনার আগে আত্মকর্মসংস্থানের হার ছিল ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। করোনার পর সেটি বেড়ে ৩৩ দশমিক ২১ শতাংশে দাঁড়ায়।

এ ছাড়া ২০১৯ সালে দরিদ্র খানা বা পরিবারের মধ্যে ৩৯ দশমিক ২৯ শতাংশ এমএফএস ব্যবহার করত। করোনার পর অর্থাৎ ২০২২ সালে সেটি বেড়ে ৭৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ হয়েছে। যদিও তাদের ব্যাংক হিসাব খোলার পরিমাণ খুব একটা বাড়েনি। করোনার আগে ৩২ দশমিক ২২ শতাংশ পরিবারের ব্যাংক হিসাব ছিল। পরে সেটি বেড়ে হয়েছে ৩৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন,
দেশে বৈষম্য বাড়ছে, তবে সেটি প্রাকৃতিক নয় বরং মানব সৃষ্ট।সম্পদ যখন সৃষ্টি হয় তখন বৈষম্য অবধারিত। বৈষম্য প্রশমনে ও দরিদ্র মানুষের কষ্ট কমাতে কাজ করছে সরকার। তারই অংশ হিসেবে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতার মতো ভাতা দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা কাজ না করেও ভাতা পাচ্ছেন। সমতাভিত্তিক সুযোগ নিশ্চিত করা গেলে বৈষম্য কমানো সম্ভব। আমরা সেটিই করার চেষ্টা করছি।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকার বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার সমতা সৃষ্টিতে কাজ করছে। যাতে সবাই সমান সুযোগ পায়। সামাজিক নিরাপত্তার মতো কর্মসূচি বাড়িয়ে বৈষম্যের ব্যথা কিছুটা কমার বা সহনীয় পর্যায়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

তিনি বলেন, এখন এ দেশে গ্রাম শহর এক হয়ে গেছে। আলাদা করে গ্রাম ও শহরের সবকিছু হিসাব করার দরকার নেই। সব কিছু ক্ষেত্রেই একটি হিসাবই যথেষ্ট।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, করোনার সময় দরিদ্রতা বেড়ে ছিল এটা ঠিক। সরকারের সঠিক পরিকল্পনা এবং উদ্যোগে নিয়ন্ত্রণ কমানো সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে করোনার সময়ে বিভিন্ন উৎপাদমুখী শিল্পকারখানা বন্ধ না রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ কারণে অর্থনীতিতে বড় ধরনের ক্ষতির প্রভাব পড়েনি।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিৎ কর্মকার।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page