সিনিয়র রিপোর্টার:
বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) দক্ষ ফ্যাশন পেশাজীবী এবং ডিজাইনারদের একটি পুল তৈরি করতে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে।
এই পেশাজীবী ও ডিজাইনাররা দেশীয় কাপড় এবং উপকরণ ব্যবহার করে উচ্চ মূল্যের ফ্যাশনেবল পোশাক তৈরিতে কাজ করবে।
প্রশিক্ষণ উদ্যোগটি ইআইএফ এক্সপোর্ট ডাইভারসিফিকেশন অ্যান্ড কম্পিটিটিভনেস ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (টায়ার-২) অধীনে হাই অ্যান্ড ফ্যাশন প্রজেক্ট (আন্তর্জাতিক রপ্তানি বাজারের সাথে বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে সংযুক্তকরণ) এর একটি অংশ।
সমঝোতা অনুযায়ী ডিজাইনার, প্যাটার্ন মার্কার, মার্চেন্ডাইজার, দেশীয় টেক্সটাইল সামগ্রী ব্যবহারকারী তাঁতি এবং ফ্যাশন ও টেক্সটাইল শিক্ষার্থীসহ বাংলাদেশি টেক্সটাইল পেশাজীবীদের স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে পোশাকে সংযুক্ত করে উচ্চমানের ফ্যাশনেবল পোশাক তৈরি ও ডিজাইনের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
বিজিএমইএ জানিয়েছে, প্রশিক্ষণটি বিজিএমইএর সেন্টার অব ইনোভেশন, এফিশিয়েন্সি অ্যান্ড অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথের (সিআইইও এসএইচ) অধীনে পরিচালিত হবে, যেখানে মোট ১৬০ জন পেশাজীবী বৈশ্বিক হাই-এন্ড ফ্যাশন স্পেস, কালেকশন ডেভলপমেন্ট, সাসটেইনেবিলিটি ইস্যু প্রভৃতি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যে সুযোগগুলো রয়েছে, সেগুলো বিষয়ে নিবিড় প্রশিক্ষণ লাভ করবেন।
প্রশিক্ষণ সেশনগুলো পরিচালনা করবেন বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার, শিকাগো-ভিত্তিক ফ্যাশন ব্র্যান্ড নেভালের প্রতিষ্ঠাতা আনাদিল জনসন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও শাখার রপ্তানি বহুমুখীকরণ ও বৈচিত্র্যকরণ প্রকল্পের (টায়ার-২) উপ-সচিব এবং প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া এবং বিজিএমইএর পরিচালক নীলা হোসনা আরা সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
মঙ্গলবার (১৬ মে) ঢাকার উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে ডেভিড অস্টিন আঞ্চলিক পোর্টফোলিও ম্যানেজার, ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেস এবং রাফায়েল নিকোল ড্যানিয়েল কুইন্টাৰ্ড, পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট অফিসার, ইআইএফ এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারিয়েট ডব্লিউটিও উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেল বাংলাদেশি ঐতিহ্যকে উন্নতমানের ফ্যাশন পণ্যে রূপান্তরিত করতে এবং আন্তর্জাতিকভাবে এই পণ্যগুলোর জন্য একটি বাজার তৈরি করার লক্ষ্য নিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
বাংলাদেশের সমৃদ্ধময় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ফ্যাশনের সঙ্গে যুক্ত করে পোশাক রপ্তানির সুযোগ অন্বেষণ করাও এই প্রকল্পের লক্ষ্য।
এটি জামদানি, খাদি, সিল্ক ও মণিপুরির মতো ঐতিহ্যবাহী টেক্সটাইল এবং ফেব্রিক থেকে তৈরি ফ্যাশনেবল পোশাকের মাধ্যমে বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতি ও বস্ত্রশিল্পের ঐতিহ্যকে আন্তর্জাতিকভাবে উপস্থাপন করার সুযোগ তৈরি করে দেবে।
প্রকল্পটি স্থানীয় তাঁতিদের সক্ষমতা তৈরি করতে সাহায্য করবে, যাতে করে তারা দেশীয় কারুশিল্প ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে উচ্চ-মূল্যের পোশাক ডিজাইন করতে পারে।
এইভাবে এটি দেশীয় শিল্পকে বাঁচানোর পাশাপাশি বাংলাদেশী তাঁতিদের জন্য কর্মসংস্থানের দ্বার উন্মুক্ত করবে।
এছাড়া এটি পোশাক খাতে পণ্য বৈচিত্র্য আনা, উচ্চতর মূল্য সংযোজন এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করার রূপকল্প বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্যভাবে সহায়তা করবে বলে মনে করে বিজিএমইএ।