নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতের দখলে থাকা প্রায় আড়াই বিঘা জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ। দীর্ঘ ৪৫ বছর পর বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ায় নওগাঁ সীমান্তে ৭৫ শতাংশ জমিতে বাংলাদেশের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। দু’দশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের পতাকা বৈঠকের মধ্যদিয়ে এই জমির বিরোধের স্থায়ী নিস্পত্তি হয়। বিজিবি-বিএসএফের আলোচনার মধ্যদিয়ে অন্যান্য অঞ্চলের জমি বিরোধের নিষ্পত্তির আশা করা হচ্ছে।
নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়নের চক রামচন্দ্রপুর মৌজায় আড়াই বিঘা বা ৭৫ শতাংশ জমি নিয়ে ভারতের সঙ্গে বিরোধ চলছিল ৪৫ বছর ধরে। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর বাংলাদেশি চাষীরা এই জমি ফেরত পেতে যাচ্ছেন।
নওগাঁ সীমান্তের ১শ গজ ভেতরের এ জমি ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের দখলে ছিল। কিন্তু এরপরেই জমিটি নিয়ন্ত্রণে নেয় বিএসএফ। চাষবাদে বাধা দেয়া হয় বাংলাদেশের কৃষকদের। এনিয়ে দুই দেশের মধ্যে অসংখ্যবার পত্র চালাচালি হলেও বিরোধ নিষ্পত্তিতে কালক্ষেপণ করে আসছিল বিএসএফ। স¤প্রতি বিজিবি নওগাঁর পতœীতলা ১৪ ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে বিষয়টি স্থায়ী নিষ্পত্তির জন্য জমি জরিপসহ পতাকা বৈঠকের আমন্ত্রণ জানানো হয় বিএসএফকে। এরই প্রেক্ষিতে স¤প্রতি সীমান্তের ২৫৮/৬ এসআর পিলারের কাছে নওগাঁর ধামইরহাট রামচন্দ্রপুর খেলার মাঠে কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ল্যান্ড সার্ভেয়ারের জমি জরিপ ও উভয় দেশের ভ‚মি বিভাগের কাগজপত্র চুলচেরা বিশেষণ শেষে ৭৫ শতাংশের কিছু বেশি জমির মালিকানা পায় বাংলাদেশ। তবে ভারত সরকারের অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত আপাতত কোনো পক্ষই জমিটি ভোগ দখল করতে পারবে না বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। পতœীতলা ১৪ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হামিদ উদ্দিন বলেন, উভয় দেশের ল্যান্ড সার্ভেয়ার ছিলেন, ওনারা রেফারেন্স পিলার থেকে পরিমাপ করে দেখিয়েছেন যে জমিটি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল সে জমিটি আসলে বাংলাদেশের।
দেশের মাটি ফিরে পাওয়ার খবরে খুশি স্থানীয়রা। বলছেন, দখল প্রতিষ্ঠা হলে আবারও চাষাবাদ শুরু করবেন তারা। স্থানীয়রা জানান, এই জমিতে গম, আল, পেঁয়াজ হতো। এছাড়া ইরি ধান আবাদ করতাম। ওই আবাদই আবার করা হবে। অনেক আনন্দ লাগছে যে জমি আমরা ফেরত পাচ্ছি। দেশের জমি ফিরে আসছে।
ভারত সীমান্তে যেসব জমির মালিকানা অমীমাংশিত রয়েছে সেগুলোরও দ্রæত সমাধান চান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। আগ্রাদ্বিগুণ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন বলেন, আশা করছি, বাংলাদেশের যেসব সীমান্তে এরকম বিবাদমান সমস্যা রয়েছে তা সমাধান করার জন্য। চক রামচন্দ্রপুর মৌজায় আরএস ৭২ দাগের অন্তর্ভুক্ত জমিগুলো তিন ফসলী। বছরে দু’বার ধান ও সবজি চাষ হয়।