নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজি ছিল অতি স্বল্প। মাত্র ২০৯ রান নিয়ে এই যুগে আর যা-ই হোক, ওয়ানডে ক্রিকেটে জয়ের আশা করা যায় না। তবু মিরপুরের উইকেটের সৌজন্যে জমে উঠল ম্যাচ। একটা সময় বাংলাদেশের জয়ের আশাও তৈরি হলো। বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের সামনে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে ইংল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করলেন ডেভিড মালান। হাঁকালেন সেঞ্চুরি। ৩ উইকেটের পরাজয়ে সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ।
রান তাড়ায় নামা ইংলিশদের আটকাতে প্রথম ওভারে সাকিব আল হাসানের হাতেই বল তুলে দেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ওভারের শেষ বলেই আসে সাফল্য। দলীয় ৪ রানে তামিম ইকবালের তালুবন্দি হয়ে ফেরেন বিপজ্জনক জেসন রয় (৪)। দলের রানও তখন ৪। এরপর তাইজুলের জোড়া আঘাতে ৪৫ রানে নেই ৩ উইকেট! এই স্পিনারের শিকার হয়ে ফেরেন ফিল সল্ট (১২) এবং জেমস ভিন্স (৬)। এরপর মঞ্চে তাসকিন। এই পেস তারকার বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার (৯)। ২১তম ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে এসে উইল জ্যাকসের ফিরতি ক্যাচ ছাড়েন মুস্তাফিজ।
১০৩ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর দেয়াল হয়ে থাকা ডেভিড মালান ফিফটি তুলে নেন ৯২ বলে। তার সঙ্গী হন মঈন আলী। তবে ইংলিশ অলরাউন্ডারকে ১৪ রানেই বোল্ড করে দেন মিরাজ। বাংলাদেশের পথের কাঁটা ডেভিড মালান দারুণ ব্যাট করছিলেন। তার কারণেই বাংলাদেশ ম্যাচ থেকে ছিটকে যাচ্ছিল। এমন সময় ক্রিস ওকসকে (৬) তামিম ইকবালের দরুণ ক্যাচে পরিণত করেন তাইজুল। কিন্তু মালান তখনো উইকেটে। ১৪০ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। তাকে দারুণ সঙ্গ দিচ্ছিলেন আদিল রশিদ। এই দুজনের ব্যাটেই ৮ বল আর ৩ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড। ডেভিড মালান ১৪৫ বলে ৮ চার এবং ৪ ছক্কায় ১১৪ এবং আদিল রশিদ ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন। ৫৪ রানে ৩ উইকেট নেন তাইজুল, মিরাজ নেন ২টি।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৭.২ ওভারে ২০৯ রানে অল-আউট হয় বাংলাদেশ। পঞ্চম ওভারে ভাঙে ৩৩ রানের ওপেনিং জুটি। ক্রিস ওকসকে স্কয়ার লেগ দিয়ে চমৎকার পুল শটে ছক্কায় উড়িয়ে পরের বলেই এলবিডাব্লিউ হয়ে যান লিটন দাস (৭)। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি। বাংলাদেশকে দ্বিতীয় ধাক্কাটা দেন মার্ক উড। বোল্ড হয়ে যান অধিনায়ক তামিম ইকবাল (২৩)। শান্ত-মুশফিকের জুটি বেশ জমে উঠেছিল। তবে আদিল রশিদকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মুশফিক (১৭) ফিরলে ভাঙে ৪৪ রানের সম্ভাবনাময় জুটি। সাকিবও আউট হয়েছেন একই শট খেলতে গিয়ে। মঈন আলীর বলে বোল্ড হওয়ার আগে করেন ৮ রান।
দারুণ খেলতে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত ফিফটি তুলে নেন ৬৭ বলে। এরপর আর বেশি দূর যেতে পারেননি। আদিল রশিদের গুগলিতে পুল করতে গিয়ে জেসন রয়ের তালুবন্দি হয়ে থামে তার ৮২ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৫৮ রানের ইনিংস। এরই সঙ্গে ভাঙে মাহমুদ উল্লাহর সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ৫৩ রানের জুটি। এরপর মার্ক উডের বলে মাহমুদ উল্লাহ (৩১) আউট হলে বেশ চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। ১৬২ রানে নেই ৬ উইকেট। আফিফ হোসেন ৯, মেহেদি মিরাজ ৭ রানে ফিরলে ২০০ ছোঁয়া নিয়েই সংশয় জাগে। শেষদিকে তাসকিন (১৪) আর তাইজুল (১০) দলকে টানেন। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন আর্চার, মার্ক উড, মঈন আলী ও আদিল রশিদ।