ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলা কিশমত সিন্দাগড় উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মতিলাল রায়কে অপহরণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ৭ নং হাজীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গয়া নাথ রায়ের বিরুদ্ধে।
কিসমত সিন্দাগড় উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হলেন পীরগঞ্জ উপজেলার হরসুয়া গ্রামের মৃত জগেন্দ্র নাথ রায়ের ছেলে শ্রী মতিলাল রায়।
অভিযুক্ত ৭ নং হাজীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হলেন পীরগঞ্জ উপজেলার সিন্দাগড় গ্রামের মৃত সিপিন্দর রায়ের ছেলে শ্রী গয়া নাথ রায়।
জানা যায় গত কয়েক মাস আগে কিসমত সিন্দাগড় উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন হাজীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গয়া নাথ রায়। এরইমধ্যে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক মতিলাল রায় অবসরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। প্রধান শিক্ষক অবসরে যাওয়ার কথা জানাজানি হলে যে কোন কিছুর বিনিময়ে প্রধান শিক্ষকের যায়গা ও চেয়ার দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেন সহকারী শিক্ষক গয়া নাথ রায়। এমতাবস্থায় প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পেতে মোটা অংকের টাকার প্রস্তাবও দিয়ে বসেন মতিলাল রায়কে।
গয়া নাথের এমন প্রস্তাবে রাজি না হয়ে স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও অন্যান্য সদস্যদের সাথে পরামর্শ করে যোগ্য ব্যক্তিকে অগ্রাধিকার ও প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে অবসরে যাওয়ায় মতি লাল রায়ের প্রতি ক্ষিপ্ত হন গয়া নাথ।
তথ্য সুত্রে জানা যায়, এরই জের ধরে গত ৮ ই নভেম্বর ২২ ইং তারিখে অবসরে যাওয়া প্রধান শিক্ষককে অপহরণের পরিকল্পনা করেন গয়া নাথ ও তাঁর সহযোগীরা।
যেমন ভাবনা তেমন কাজ, গোপন সুত্রে জানা যায়, মতিলাল রায়কে অপহরণ করতে গয়া নাথ ৭০ হাজার টাকা চুক্তি করেন ৭-৮ জন বিশিষ্ট দএকটি অপহরণ চক্রের সাথে।এবং অপহরণের পর ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার হাওলাত নামা চুক্তি পত্রে মতিলালের থেকে টিপসহি ও সাক্ষর রাখার পরিকল্পনাও করেন তিনি পরিকল্পনা অনুযায়ী পীরগঞ্জ কসমিক কম্পিউটার এন্ড ট্রেনিং সেন্টার থেকে একটি চুক্তিপত্র তৈরি করেন তাঁরা,যার সত্যতা স্বীকার কয়েকজন অপহরণকারী সদস্য।
অপহরণ চক্রের সাথে জরিতরা হলেন ১। ছদ্মনাম বাবুল (পটুয়াপাড়া)২। ফয়সাল (পটুয়াপাাড়া) ৩। সাইফুল (গোগর)৪। মামুন ( গাংগুয়া)৫।আলিম (এম পাড়া) ৬। রাহিম ( পটুয়া পাড়া) অপহরণের সময় ব্যাবহৃত প্রাইভেটকারের ড্রাইভার লুৎফর সহ আরো অনেকে।
ঘটনার বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মতিলাল ও স্থানীয়রা বলেন গত ০৮।১১।২২ ইং তারিখে আনুমানিক রাত্র ৮ টার দিকে সাদা রঙের একটি প্রাইভেট কার নিয়ে গয়া নাথ সহ ৭-৮ জনের একটি দল আমার যাতায়াতের রাস্তায় পথরোধ করে আমাকে প্রাইভেটকারে উঠে বসতে বলেন,
আমি প্রাইভেটকারে উঠতে অনিচ্ছা প্রকাশ করিলে অপরিচিত কয়েকজন ব্যাক্তি আমার কাছে আসে। আমি অপহরণের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে কৌশলে মুঠোফোন আমার পরিবারকে জানালে পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা মিলে তাদের ধাওয়া করলে তাৎক্ষনিক তারা পালিয়ে যায়।
পরে ঘটনার বিষয়টি সবার সাথে পরামর্শ করে প্রাথমিকভাবে ইউ পি চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে অপহরণ করতে ব্যার্থ হওয়ায় অপহরণকারীদের চুক্তির টাকা দিতে অস্বীকার করলে গয়া নাথ রায়ের আর টি আর এ্যাপাচি মোটর সাইকেলটি আটক করে রাখেন দলের সদস্যরা। অবশেষে ৭ নং হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদ ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ শহিদুল ইসলাম চৌদ্দ হাজার টাকায় আপোষ মিমাংসা করিয়ে দেন বলে জানা যায়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে গয়া নাথ রায়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন আমরা গিয়েছিলাম ঠিক কিন্তু পরে আমার ভুল বুঝতে পেরে আমি ফেরত চলে আসি।