রাজধানীর উত্তরায় সারা দেশের স্থানীয় দৈনিক ‘আজকের পত্রিকার’ পত্রিকার সাংবাদিক নুরুল আমিন হাসানের উপরে ঘটনায় মামলা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার সোমবার (১৪ নভেম্বর) বলেন, ‘সাংবাদিক নুরুল আমিন হাসানের উপর হামলার ঘটনায় গত রাতে (রোববার) আমারা মামলা নিয়েছি। এখন হামলাকারী সকল আসামীদের গ্রেপ্তার করবো।’
এর আগে তুরাগ থানাধীন উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টর সংলগ্ন খালপাড় এলাকার রূপায়ন সিটির বিপরীত পাশে শুক্রবার (১১ নভেম্বর) রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত দুই দফায় এ হামলা চালানো হয়। হামলার পরপরই পুলিশের সহযোগীতায় উত্তরায় বসবাসরত সাংবাদিকরা নুরুল আমিন হাসানকে সেখান থেকে উদ্ধার করে গাজীপুরের টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ্ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সাংবাদিক হাসান সেখানে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সাংবাদিক হাসান পেশাগত কাজের জন্য ওই দিন খালপাড় যাওয়া মাত্রই পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা মিরাজ শিকদার (৪০), রাসেল খান (৩২), তাসলিমা তমা (৩২) ও রবিউল ইসলাম রাজু ওরফে বিডিআর (৫২) সহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন হাতে লাঠি সোঠা, রড, চাকু ইত্যাদি নিয়ে আমার গতিরোধ করে। সেই সাথে গালিগালাজ করে। হাসান এর প্রতিবাদ করলে সকলে মিলে এলোপাথাড়ি মারধর করে। এক পর্যায়ে রাসেল খান আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে। তখন কোন রকম হাসান নিজেকে ছাড়িয়া নেয়। পরে মিরাজ শিকদার লোহার রড সাংবাদিক হাসানের ডান হাতের কব্জিতে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। তাসলিমা তমা লাঠি দিয়দ পিঠে আঘাত করে। মিরাজ তার গলায় থাকা সাত আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন টান মেরে ছিনিয়ে নেয়। তাসলিমা তমা প্যান্টের পকেট থেকে ৪২০০ টাকা কেড়ে নেয়। পরে খবর পেয়ে তুরাগ থানা পুলিশ ও উত্তরায় বসবাসরত সাংবাদিকরা হাসানকে উদ্ধার করে গাজীপুরের টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ্ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।
হামলাকারীরা হলেন, তুরাগের ধলিপাড়া এলাকার মোনায়েম খানের ছেলে রাসেল খান, ঝালকাঠি সদরের উত্তর মানপাশা এলাকার আব্দুল রাজ্জাক সিকদারের ছেলে মিরাজ শিকদার (৪০), গোপালগঞ্জ সদরের নিজড়া মধ্যপাড়া এলাকার শিহাব উদ্দিনের ছেলে রবিউল আলম রাজু ওরফে বিডিআর।
খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, আসামী রাসেল খানের বিরুদ্ধে নওগাঁর পত্নীতলা থানায় গণধর্ষণ মামলা, আদালতে তথ্য প্রযুক্তি আইনে এবং মানহানি মামলা ও প্রতারণা পূর্বক টাকা আত্মসাৎতের অভিযোগ রয়েছে। রবিউল আলম রাজু ওরফে বিডিআর রাজুর বিরুদ্ধে মাদক, অপরহণ, চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। মিরাজ শিকদারের বিরুদ্ধে হলমার্ক কেলেঙ্কারির আসামীকে অপরহণ করে কোটি টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে উত্তরখান থানায় এবং বনানী থানায় চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। এছাড়াও তমা গত দুই মাস আগে উত্তরখানের মাজার এলাকায় চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জনগণের হাতে গণধোলাই খেয়েছে।
ভুক্তভোগী নুরুল আমিন হাসান বলেন, ‘দুর্বৃত্তদের হামলায় আমি এখনো অসুস্থ রয়েছি। শরীরে প্রচন্ড জ্বর ও সারা শরীরে ব্যাথা রয়েছে। আমি চাই দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনা হোক।’