
- মোহাম্মদ আদনান মামুন, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:-
শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী নদী বন্দর বরমী শীতলক্ষ্যা। গাজীপুরের শ্রীপুরে শীতলক্ষা নদীর তীরে গড়ে উঠেছে বরমী বাজার। বরমী শীতলক্ষা নদীকে ঘিরে এই শ্রীপুর উপজেলা সহ অন্যান্য পার্শ্ববর্তী দুই উপজেলার মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড। ১৫৯০ সালে থেকে বরমী বাজার শীতলক্ষা নদীর তীরে যুগের পর যুগ ধরে শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের সবজিতে জমে উঠেছে শীতলক্ষ্যা নদী বন্দর।
উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বরমী বাজার সাপ্তাহিক হাটবার বুধবার। হাটের দিন বিক্রির জন্য পার্শ্ববর্তী উপজেলা গফরগাঁও কাপাসিয়া সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা তাদের ক্ষেতের টাটকা শাকসবজি খেয়া নৌকা ভরে বাজারে আসেন।
বরমী বাজারে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শীতলক্ষ্যা খেয়া ঘাটে ভোর থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত শীতকালীন টাটকা শাক-সবজি নিয়ে বসে আছেন। এরপর এগুলো হাক-ডাক করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করছেন। সকাল ১১টা পর্যন্ত খেয়াঘাটেই বিক্রি হয় এসব সবজি।
বাজারের আড়তদার আজাদ বলেন, এই হাটের বেশিরভাগ সবজি আসছে পার্শ্ববর্তী উপজেলা গফরগাঁওয়ের টাংগাব ইউনিয়ন থেকে। সকালে কৃষকরা ইঞ্জিন চালিত নৌকা ভর্তি করে এসব সবজি নিয়ে আসেন। প্রতি হাটের দিন ৪-৫ লাখ টাকার সবজি বেচাকেনা হয়ে থাকে এই বাজারে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররা আসছেন এই বাজারে। এছাড়াও শীতকালীন সবজি কৃষকদের কাছে থেকে সরাসরি কিনতে পারছেন পাইকাররা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও এসব সবজি যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
গফরগাওয়ের টাংগাব গ্রামের কৃষক গফর মিয়া বলেন, এবার চলতি মৌসুমে চার বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছি। তীব্র শীতের কারনে অনেক গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। তারপরেও প্রতি সপ্তাহে ৭০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারি। দামও মোটামুটি ভালো পাচ্ছি।
বাজারে সবজি কিনতে আসা পাইকার রাজন মিয়া বলেন, শীতকালীন টাটকা সবজি কিনতে বাজারে এসেছি। গত সপ্তাহে দাম একটু কম ছিল। তবে আজ বাজারে সবজির দাম একটু বেশি। ২০ টাকা করে ২০০ পাতাকপি ও টমেটো কিনেছি ৩২ টাকা করে।
আড়তের সবজি ব্যবসায়ী আমিনুল জানান, বাজারে সবজির সরবরাহ অনেক ভালো প্রায় সব সবজিতেই দাম পাচ্ছেন বিক্রেতারা। এখানে তিনজন আরব দা রয়েছে প্রতিদিন এক একজনের ৫ হাজার টাকার মত করে আড়তদারী থাকে।
নৌকা থেকে সবজি আনলোড করছেন শ্রমিক আরফান। তিনি জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে ১১টা পর্যন্ত সবজি আনলোড করে থাকেন। পাতি খাচা সবজি আনলোড করতে তাকে দেয়া হয় ১০ টাকা। এতে তিনি প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পান।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা জানান, এ বছর উপজেলায় মোট ১৩ হাজার ৩৮০ হেক্টর আবাদি জমি রয়েছে এর মধ্য ২৫ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে।