গাজীপুরের শ্রীপুরে আনোয়ারা মান্নাফ টেক্সটাইল কারখানার রিং সেকশনে কাজ করছিল আশিক অপু রাজুসহ কয়েকজন শিশু শ্রমিক। ভোর পৌনে ছয়টার দিকে কাজ শেষ করার পূর্ব মুহূর্তে অপুর পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে দেয় রাজু। এ সময় অপু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
শনিবার (২ এপ্রিল) সকালে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া দক্ষিণখন্ড গ্রামের আনোয়ারা মান্নাফ টেক্সটাইল কারখানায় ঘটনাটি ঘটে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত রাজুকে আটক করেছে শ্রীপুর থানা পুলিশ।
নিহত অপু মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার পূর্ব শিয়ালদি গ্রামের পলাশ দেওয়ানের ছেলে। সে তার বাবা-মায়ের সাথে কেওয়া দক্ষিণখন্ড গ্রামের আব্দুর সামাদের বাড়িতে ভাড়া থেকে ওই কারখানায় চাকরি করতো।
অভিযুক্ত রাজু দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী থানার মধ্যপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ জনাব আলীর ছেলে। সে অপুর সাথে একই কারখানায় চাকরি করতো।
নিহত অপুর মা জোসনা খাতুন জানান, চার মাস পূর্বে অপু ওই কারখানায় সাড়ে চার হাজার টাকা বেতনে চাকরি নেয়। শুক্রবার রাত দশটায় অপু কারখানায় কাজ করতে যায়। সকালে ডিউটি শেষের পথে তার সহকর্মী রাজু তার পায়ুপথে হাওয়া মেশিন এর পাইপ ঢুকিয়ে দেয়। এতে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং পেট ফুলে যায়।
অপুর সাথে কর্মরত প্রত্যক্ষদর্শী শিশু শ্রমিক আশিকুর জানায়, তাদের ছুটির কয়েক মিনিট আগে রাজু অপুর পায়ুপথে হাওয়া মেশিন এর নল দিয়ে বাতাস ঢুকিয়ে দেয়। এতে তার পেট ব্যথা শুরু হলে সে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাক্তার জাবেদ পাটোয়ারী জানান, সকাল সাতটার দিকে পেট ফোলা অবস্থায় ওই শিশুকে হাসপাতালে আনা হয় অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
কারখানার এডমিন ম্যানেজার জাকারিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
কারখানার সিকিউরিটি ইনচার্জ মহসিন জানান, অপু বই কারখানার উৎপাদন বিভাগের রিং সেকশন এ চাকরি করতো। আজ ভোর পৌনে ছয়টার দিকে অপু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
কালিয়াকৈর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আজমির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অভিযুক্ত শিশু রাজুকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহতের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হবে। পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।