ওয়ান ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় নির্যাতনের শিকার হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তারেক রহমান। পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে চিকিৎসার জন্য যুক্তরায্য যান বিএনপির তৎকালীন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব। পরবর্তীতে দলের কাউন্সিলে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন তিনি। তবে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে গেলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয় তারেক রহমানকে। লন্ডন থেকেই দলকে পরিচালনা করে আসছেন তিনি।
ওয়ান ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তারেক রহমানের নামে অন্তত ৮০টি মামলা দায়ের করা হয়। তারমধ্যে কয়েটি মামলায় সাজা দেয়া হয় তাকে। যে কারণে দলের নেতাকর্মীরা চাইলেও দেশে ফিরতে পারছিলেন না তিনি।
ছাত্র জনতার বিপ্লবে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থতিতে তারেক রহমানের দেশের ফেরার পরিবেশ তৈরি হয়। তবে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় একাধিক মামলার সাজা। অবশ্য ধীরে ধীরে মামলা থেকে খালাস পেতে শুরু করেছেন বিএনপির এ শীর্ষ নেতা। সবশেষ রোববার (১ ডিসেম্বর) ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন তিনি।
বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনের প্রতীক্ষায় রয়েছেন। তাদের প্রত্যাশা, দ্রুততম সময়ে তিনি দেশে ফিরবেন। তবে তার বিরুদ্ধে আরও অনেক মামলা রয়েছে। ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এসব মামলা হয়েছে।
জানা গেছে, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ওয়ান-ইলেভেন সরকারের আমলে ১৭টি মামলা হয়। পরে শেখ হাসিনার সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা, অর্থ পাচার এবং দেশব্যাপী বিভিন্ন জেলা-থানায় মানহানির মামলাসহ আরও অন্তত ২০টি মামলা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলা ও থানায় তাঁর বিরুদ্ধে আরও ৫০টি মামলা রয়েছে। যদিও বিভিন্ন সময় জেলা ও থানা পর্যায়ে বিচ্ছিন্নভাবে দায়েরকৃত এসব মামলার সঠিক পরিসংখ্যান নেই বিএনপির আইনজীবীদের কাছে।
ইতিমধ্যেই অনেক মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন তারেক রহমান। সবশেষ রোববার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমান বেকসুর খালাস পেয়েছেন। রায়ের পর তার আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, তারেক রহমানকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় জড়িয়েছিল আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, তারেক রহমান সম্পূর্ণভাবে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রোপাগান্ডার শিকার হয়েছেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৮ সালে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমানোর পর এখনও সেখানেই রয়েছেন। আওয়ামী লীগের দেশ দশকের শাসন অবসানের পর এখন তার দেশে ফেরার আলোচনা রয়েছে। তবে তিনি সব মামলা থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরতে চান বলে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বর্তমানে যুক্তরাজ্য সফরে রয়েছেন। সেখানে তার সঙ্গে তারেকের দেখা হওয়ার কথা।