বিশেষ প্রতিনিধি:
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ‘‘বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যখাতে নতুন এক অশনি সংকেত অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স। মানুষ থেকে শুরু করে গ্রামে-গঞ্জে পশুপাখির মধ্যেও এটি বিস্তার লাভ করেছে।’’ বৈশ্বিক স্বাস্থ্যখাতের এই হুমকি মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি সকল খাতকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও এ বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) বিষয়ক গ্লোবাল লিডার্স গ্রুপের কো-চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।’’
ব্র্যাকের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘‘ব্রেস্ট ক্যান্সার বা স্তন ক্যান্সার, সার্ভিক্যাল ক্যান্সার বা জরায়ুমুখ ক্যান্সার ও হাইপারটেনশনের মতো বিষয়গুলোতে আরও বেশি সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। একজন ব্রেস্ট ক্যান্সারের রোগী যখন চিকিৎসকের আছে আসেন, তখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আর বিশেষ কিছু করার থাকে না। অথচ, প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় হলে তা অনেকাংশেই নিরাময়যোগ্য। একইভাবে গ্রামাঞ্চলে অনেক ঠোঁটকাটা, তালুকাটা রোগী ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। তারা সঠিক চিকিৎসা পায় না।’’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশে স্বাস্থ্যখাতে অনেক ভালো কাজ হচ্ছে, কিন্তু এসব ক্ষেত্রে অনেক সময় সমন্বয়ের অভাব দেখা যায়। সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলো সমন্বিতভাবে কাজগুলো করলে মানুষ উপকৃত হবে।’’ এ প্রসঙ্গে তিনি শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এবং ব্র্যাক লিম্ব অ্যান্ড ব্রেস সেন্টার (বিএলবিসি) পরিকল্পিত ও পরিচালিত কৃত্রিম অঙ্গ সংস্থাপন চিকিৎসাকেন্দ্রের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘এর মাধ্যমে অনেক মানুষ কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সুবিধা পাচ্ছেন।’’ মানুষের কল্যাণে বেসরকারি খাতের সহযোগিতায় এমন আরও অনেক উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
‘‘ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচির ভবিষ্যত পরিকল্পনা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এসব কথা বলেছেন। ঢাকার মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং ব্র্যাকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের সম্মানিত অতিথি স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যখাতে সরকারের কাজে যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সহযোগিতা করে আসছে, তাদের মধ্যে ব্র্যাক অন্যতম। তবে এসব কাজে ধারাবাহিকতা ধরে রাখাটা অত্যন্ত জরুরি। কোনো একটা কর্মসূচি বা প্রকল্প হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়া অবাঞ্চিত। তাই প্রকল্প শুরু করার সময়ই একটি প্রস্থান পরিকল্পনা সঠিকভাবে ডিজাইন করা গুরুত্বপূর্ণ।’’ ব্র্যাক যেভাবে স্বাস্থ খাতে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমে সহযোগী হিসেবে কাজ করছে সেটা অব্যাহত থাকলে মানুষ উপকৃত হবে। চরের পাশাপাশি হাওড় অঞ্চলে প্রান্তিক মানুষের জন্য কাজ করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।