গাজীপুরের শ্রীপুরে চাঁদার টাকা না পেয়ে জমি জবর দখল ও হত্যার হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ( ০৯ আগষ্ট) মঙ্গলবার রাতভর শ্রীপুরের কপাটিয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনায় বুধবার শ্রীপুর মডেল থানায় ভুক্তভোগী আইনজীবী ১০জনকে আসামী করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এলাকাবাসী, পুলিশ ও ভোক্তভুগীরা জানায়, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কপাটিয়াপাড়া এলাকার এড. রহমত আলী গং এস, এ ও আর এস রেকর্ডীয় মালিলের মৃত্যু পর পিতার ওয়ারিশ সূত্রে মালিকানা সম্পত্তি ও বিভিন্ন দলিল মূলে মালিক হয়ে দীর্ঘ বছর যাবত বন্টন করে বসতবাড়ির সামনে জমি চাষ করে ভোগদখল করে আসছে। কিন্তু এস,এ ও আর, এস রেকর্ডের মালিকের মৃত্যুর দীর্ঘ বছর পর অভিযোগের আসামী হাছান আলী ওই জমি দাবী করে। এতেই দু-পক্ষের সাথে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও আর, এস রেকর্ডীয় মালিকের মৃত্যুর দীর্ঘ বছর পর ও আর, এস রেকর্ড মেনে নিয়ে ওয়ারিশিয়ানদের কাছে থেকে অভিযুক্ত হাসান আলী জমি ক্রয় করার পরও কেন আবার দলিল সৃষ্টি করে জমি দাবী করে এসব নিয়ে প্রায় ১বছর ধরে একের পর এক গ্রাম্য শালিশসহ মেম্বার, চেয়ারম্যান নিয়ে বৈঠক হয়। এতে সবাই আর, এস রেকর্ডের বাহিরে যাওয়ার সুযোগ নেই বলে স্পষ্ট বলে দেয় হাসান আলীকে। সকল বৈঠকেই একই সিদ্ধান্ত হয় যে, যেহেতু হাসান আলী দলিল এস,এ আর, এস রেকর্ডের অনেক আগের দলিল। এজন্য তার নামে কেন এস,এ আর,এস রেকর্ড হলো না। তাই হাসান আলীর দলিল সঠিক হলে আর, এস রেকর্ড সংশোধন করে আসতে হবে। কিন্তু তিনি এড. রহমত আলী গংদের হয়রানি করার জন্য একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ দিতে থাকে শ্রীপুরের থানার অধীনস্থ মাওনা চকপাড়ার অস্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবু জাফর মোল্লার কাছে। পুলিশ একের পর এক তারিখ দিয়ে শালিশ করতে থাকে এবং তদন্ত অফিসার পরিবর্তন করে নতুন নতুন অভিযোগ দিয়ে এডভোকেট পরিবারকে হয়রানি করতে থাকে। এর জের ধরে গত মঙ্গলবার প্রতিপক্ষের নেতৃত্বে ১০-১২ জন সঙ্গীয় ভাড়া করে জমি দিবি না হয় টাকা দিবি, এই বলে রহমত আলীর কাছে ২লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করলে রাতেই রহমত আলীর বাড়িতে প্রবেশ করে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে আর বলতে থাকে চাঁদার টাকা না পেলে আজ রাতেই তুর জমি জবর দখল করবো। প্রয়োজন হলে তকে হত্যা করবো বলে হুমকি দেয়। জীবন রক্ষার্থে পরিবারের লোকজন ৯৯৯ ও চকপাড়া ফাঁড়ি পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে গড়িমসি করতে থাকে পুলিশ জাফর আলী। পরে দীর্ঘ সময় পর পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে আসামীরা যোগসাজশ করে কৌশলে পালিয়ে যায়। পুলিশ চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর অভিযোগের আসামীসহ বাহিরের আরো কিছু সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র, রড, শাবল, হকিস্ট্রিক নিয়ে হত্যার উদ্দ্যেশে বাদীর বাড়ি ঘেরাও করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে মধ্যরাতে ভোক্তভুগীর ছেলে আবারও ৯৯৯ফোন করে বিস্তারিত জানালে পুলিশ আসার খবর পেয়ে আবারও আসামীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় এড. রহমত আলী বাদী হয়ে পরের দিন বুধবার সকালে শ্রীপুর মডেল থানায় ১০জনকে আসামী করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দেয়ার কথা কৌশলে আসামীগন জানতে পেয়ে বাদীকে অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দেয়। অভিযোগ না তুলে নিলে বাদীকে খুন করে ফেলবে। এ কারনে বাদী ও তার পরিবার বর্তমানে ভয় ও আতংকে রয়েছে।
অভিযোগের বাদী এডভোকেট রহমত আলী মুঠোফোনে বলেন, দীর্ঘ প্রায় ৫০বছর ধরে ওই জমি আমার বাবা ওয়ারিশ হিসেবে ও তার পরে আমি ভোগদখল করে আসছি। কিন্তু হঠাৎ করে এস,এ ও আর, এস রেকর্ডের পূর্বের দলিল সৃষ্টি করে হাসান আলী জমি দাবী করে। এনিয়ে অনেক বৈঠক ও শালিশ হলেও হাসান আলী আইন ও শালিশের রায় মানে না। আইন অনুযায়ী তিনি আর,এস রেকর্ড সংশোধন করে নিয়ে আসতে পারলে আমরা জমি ছেড়ে দিবো। সত্যি বলতে ওই দলিলটা সৃষ্টি করা হয়েছে। তা না হলে এত বছর পর তিনি দলিল দেখায় কেন? তাছাড়াও তিনি এই আর, এস রেকর্ড মেনে নিয়ে ওয়ারিশিয়ানদের কাছ থেকে ইতিমধ্যে জমি লিখে নিলেন কেন? এতে স্পষ্ট বোঝা যায় তিনি এই দলিল সৃষ্টি করেছেন। এখন হাসান আলী বলে জমি না দিলে ২লক্ষ টাকার চাঁদা দিতে হবে তাকে।
অভিযোগের আসামী হাসান আলীর সাথে ঘটনার বিষয়ে সম্পর্কে বক্তব্যের জন্য বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ( ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।