নিজস্ব প্রতিবেদক: বিভিন্ন পেশার আড়ালে মোটরসাইকেল চুরির শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তোলে একটি চক্র। তারা দিনের বেলা রাস্তা-ঘাটে মোটরসাইকেল চুরির জন্য টার্গেট করত। এরপর পিছু নিয়ে রেকি করে ওই মোটরসাইকেলটির অবস্থান, গ্যারেজ ও বাসা শনাক্ত করত। পরে সময়-সুযোগ বুঝে তালা ভাঙা ও কাটার যন্ত্রপাতিসহ রেকি করে ওই স্থানে অবস্থান নিত। রাতের আঁধারে মোটরসাইকেলটি চুরি করে পালিয়ে যেত। শুধু তাই নয়, চোরাই গাড়িটি চক্রের গোপন গ্যারেজে নিয়ে রঙ, ইঞ্জিন নম্বর, চেসিস নম্বর ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর পরিবর্তন করত। সেই সঙ্গে বিআরটিএর দালালের মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে সেগুলো দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করত। এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩। শুক্রবার পৃথক অভিযান চালিয়ে যশোর জেলার কোতোয়ালি থানা ও রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি চোরাই মোটরসাইকেল ও একটি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- চোর চক্রের অন্যতম মূলহোতা সৈয়দ মাহামুদ হাসান (৩৭) এবং তার প্রধান দুই সহযোগী মিরাজ হোসেন (৩২) ও মো. আল আমিন (৪৩)। তারা রঙমিস্ত্রী, গাড়ির চালকসহ বিভিন্ন পরিচয়ে বাইরে চললেও গাড়ি চুরিই ছিল তাদের প্রধান কাজ।
শনিবার রাজধানীর টিকাটুলীর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, গত ২৯ এপ্রিল রাজধানীর সবুজবাগ এলাকার বাসিন্দা ওমর ফারুকের বাসার গ্যারেজ থেকে গভীর রাতে চোর চক্রের সদস্যরা দুটি অ্যাপাচি-ফোর ভি মোটরসাইকেল তালা ভেঙে নিয়ে যায়। পরদিন মালিকরা তাদের মোটরসাইকেলগুলো খুঁজে না পেয়ে সবুজবাগ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে মামলা করেন। বিষয়টি র্যাবের কাছে এলে সিসিটিভি পর্যবেক্ষণ ও গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে মোটরসাইকেল চোর চক্রের সন্ধান পায়। চক্রটি কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে কাজ করে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গ্রেফতারদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে বিআরটিএর সুজন নামে একজন দালালের নাম উঠে আসে। সেও চোর চক্রটির একজন অন্যতম মূলহোতা। তার মাধ্যমেই মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর পরিবর্তন, ভুয়া ট্যাক্স টোকেন, রোড পারমিট, ফিটনেস সনদ, ইন্স্যুরেন্স ইত্যাদি যাবতীয় কাগজপত্র তৈরি করা হয়ে থাকে। এরপর মোটরসাইকেলটি চক্রের আরেকটি দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আল আমিন এবং মিরাজের নেতৃত্বে সেই দলটি চোরাই মোটরসাইকেলের প্রকৃত মালিক সেজে বিভিন্ন প্রতারণামূলক পন্থা অবলম্বন করে সাধারণ মানুষের কাছে তা বিক্রি করে। দীর্ঘদিন ধরে তারা এই কাজ করে আসছিল।