মানিকগঞ্জ সদর থানার রং ধনু আবাসিক হোটেলে গলা কাটা সেই তরুণীর হত্যাকারী চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত সেই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে।
২৫ নভেম্বর ২০২৪ রাত ১১.৩০ ঘটিকায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সিপিসি-৩, র্যাব-৪ এর একটি চৌকশ আভিযানিক দল মানিকগঞ্জ সদর থানার চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত গলাকাটা লাশ এর এর হত্যাকারী মোঃ রুবেল (৩৭)’কে* ৮ ঘন্টার মধ্যে ঢাকা মহানগরীর দারুস সালাম থানাধীন মাজার রোড এলাকা হতে গ্রেফতার করে। এ সময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু এবং ভিকটিমের মোবাইল উদ্ধার করতে সক্ষম হয় র্যাব।
আসামি মোঃ রুবেল (৩৭), পিতা- মোঃ লাল মিয়া,
মানিকগঞ্জ সদর থানার মত্ত এলাকার বাসিন্দা।
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ রুবেল তার স্ত্রী রুকসানাকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন।
মঙ্গলবার বিকেলে র্যাবের লে: কমান্ডার মো: আরিফ হোসেন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
র্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৮ বছর পূর্বে নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার সাহাগোলা এলাকার মোঃ সাহেবের সাথে বিয়ে হয় নিহত রুকসানার। এরপর পারিবারিক বিষয় নিয়ে মাঝে মাঝে স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য হতো তার। এক পর্যায়ে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় তাদের। এরপর রুকসানা জীবিকার তাগিদে ঢাকায় চলে আসেন এবং সাভারের গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চাকরি নেন। সেখানে সেবা নিতে আসা রুবেলের সাথে পরিচয় হয় রুকসানার। পরিচয়ের এক পর্যায়ে তারা প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে উভয়ের সম্মতিতে ২০২২ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। বিবাহের পর থেকেই স্বামী রুবেল কোনো জীবিকা নির্বাহ না করে রুকসানার জীবিকার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। এ নিয়ে প্রায়ই দ্বন্দ্ব হতো তাদের। ঘটনার ৭ দিন পূর্বে স্বামী রুবেলকে আবারও জীবিকা নির্বাহের জন্য তাগিদ দেয় রুকসানা। কোন কাজ না করলে বিবাহ বিচ্ছেদের হুমকিও দেন রুকসানা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত রবিবার দিবাগত রাতে শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রাত দেড়টার দিকে রাত্রি যাপনের উদ্দেশ্যে রংধনু আবাসিক হোটেলের ৫২৬ নং কক্ষে উঠেন তারা। আবাসিক হোটেলে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ফের বাকবিতণ্ডা হয় তাদের। এক পর্যায়ে রুকসানা রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঘুমিয়ে পড়লে স্বামী রুবেল তার সাথে থাকা ধারালো চাকু দ্বারা রুকসানাকে জবাই করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এসময় নিহত রুকসানার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু নিজ হেফাজতে নিয়ে আসামি রুবেল ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
আটকের পর অভিযুক্ত রুবেল ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং গ্রেফতারকৃত আসামীকে মানিকগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।