রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫২ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি
নতুনবাজার একশো ফিট থেকে আফতাবনগর পর্যন্ত নৌপথ চালু করা হবে: আতিকুল ইসলাম
Update : বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩, ২:১৫ অপরাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘৪০ বছর পর সূতিভোলা খাল দিয়ে নৌকায় চড়ে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় যাতায়ত করছি। এটা ইতিহাস হয়ে থাকবে। তবে আমরা যেতে চাই বহুদূর। সুতিভোলা খাল হয়ে সাঁতারকুল দিয়ে আফতাবনগর পর্যন্ত নৌপথ চালু হবে সেভাবেই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। দখল ও দূষণমুক্ত করে হাতিরঝিলের আদলে সূতিভোলা খালকে নান্দনিকভাবে সাজানো হবে। নতুনবাজার একশো ফিট থেকে শুরু করে ঐতিহ্যবাহী সূতিভোলা খাল হয়ে আফতাবনগর পর্যন্ত নৌপথ চালু করা হবে। আধুনিকভাবে খালের পাড় বাধানো হবে, সবুজায়ন করা হবে। পাড় দিয়ে ওয়াকওয়ে ও সাইকেল লেন নির্মাণ করে দেওয়া হবে।’

বুধবার (১৩ ডিসেম্বর ২০২৩) দুপুরে সূতিভোলা খাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিএনসিসি মেয়র স্থানীয় কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়ে সাতারকুল ব্রিজের নিচ থেকে নৌকায় চড়ে সরেজমিনে সূতিভোলা খাল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে সাতারকূল স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে এলাকাবাসীর সাথেও মমতবিনিময় করেন।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘আমি আজকে সূতিভোলা খালে নৌকায় চড়েছি। স্থানীয় লোকজন আমাকে জানালো দীর্ঘ চল্লিশ-পঞ্চাশ বছর আগে এই ঐতিহ্যবাহী সূতিভোলা খাল দিয়ে নিয়মিত নৌকা চলতো। কারওয়ান বাজার থেকে মালামাল নিয়ে মানুষ এই খাল দিয়ে নৌকায় করে যাতায়াত করতো। আজকে আবার দীর্ঘ সময় পরে আবার আমি এই খালে নৌকায় চড়লাম।’

মেয়র আরও বলেন, ‘সাতারকুল ব্রিজের নিচ থেকে সূতিভোলা খালে কাউন্সিলরদের নিয়ে নৌকায় চড়ে দেখলাম মানুষ কিভাবে ময়লা ফেলে খালটিকে নোংরা করেছে। খালের পাড়ে ময়লায় ভরপুর। সিটি কর্পোরেশন থেকে ফ্লোটিং এক্সকেভেটর দিয়ে কচুরিপানা পরিষ্কার করা হচ্ছে। দখলে থাকার কারণে আগে যেখানে নৌকা চড়ে যাওয়া যেতো আজ তা পুরোপুরি পারিনি। কারণ একটু আগাতেই দেখি দখল হয়ে গেছে। খাল পারে বাড়ি উঠে গেছে। একটা বাড়ি খালের পাশে উঠে গেলো দেখার কেউ নেই! কে অনুমতি দিয়েছে? কীভাবে অনুমতি দিলো সেটা যাচাই করতে সমস্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। আবার খালের ভেতর বাঁশ দিয়ে বেড়া তৈরি করে মাছ চাষ করছে। এগুলো কারা করছে? এভাবে খাল দখল করে বাড়ি যা খুশি তাই করা যাবে না। খালের সীমানা ছেড়ে মাছ চাষ করেন। জনগণের খাল ব্যবহার করে মাছ চাষ করা যাবে না। অনতিবিলম্বে এগুলো সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিচ্ছি। নিজেরা না সরালে ম্যাজিস্ট্রেট কঠোর ব্যবস্থা নিবে। সিটি জরিপ নয়, সিএস ম্যাপ অনুযায়ী খাল উদ্ধার করা হবে।’

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোতে বাড়ির সামনে খাল বা লেক রাখে। আমাদের এখানে খালকে বাড়ির পেছনে ফেলা হয় পরবর্তীতে সেই খাল ডাস্টবিন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এজন্য একের পর এক খাল দখল হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না।
ঢাকা উত্তর সিটির মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী সূতিভোলা খাল দিয়ে নৌকা নিয়ে সাঁতারকুল হয়ে আফতাবনগর দিয়ে হাতিরঝিল ঘুরে বালু নদীতে নৌকা চলাচল করা। নতুন একটি নৌপথ চালু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘খাল পরিস্কার থাকলে মশা জন্মাবে না। মানুষ স্বস্তি পাবে। এজন্য জনগণকে সতর্ক হতে হবে। আর কেউ যেনো খাল দখল না করে। আমরা আজ কচুরিপানা পরিস্কার করে দিলাম। নতুন করে যেনো কেউ দখল না করে। সেজন্য ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা আছে। খাল রক্ষায় এলাকাবাসীসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘আমরা খাল নিয়ে মাস্টার প্লান করছি। এডিবি (এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক) আমাদের খালের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে আগ্রহী। আজকে এডিবি’র একজন কনসালটেন্ট আমাদের সাথে পরিদর্শনে এসেছেন। ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে নৌপথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সূতিভোলা খালে নৌপথ চালু হবে। এছাড়াও মিরপুর রুপনগর খাল হয়ে তুরাগ নদী পর্যন্ত নৌপথ চালু হবে। এক্সপার্টদের সাথে আলাপ করছি কিভাবে সব নৌপথে সংযোগ সৃষ্টি করা যায়। অনেক বাজেট প্রয়োজন। বিভিন্ন সংস্থার সাথে আলাপ করছি। আশা করছি জনগণের সহযোগিতায় দ্রুতই কার্যক্রম চালু করতে পারবো।’

নগরবাসীর উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, ‘আমরা শহরকে যতই পরিষ্কার করি না কেন, জনগণ যদি যত্রতত্র ময়লা ফেলা বন্ধ না করে তাহলে শহর পরিষ্কার রাখা সম্ভব না। জনগণের নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ববোধ জাগ্রত হতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য খাল পরিষ্কার রাখতে হবে, দখলমুক্ত রাখতে হবে। না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের দায়ী করবে। কেউ যেন খালে ময়লা না ফেলে এ ব্যাপারে জনগণকে সোচ্চার হতে হবে। যারা যত্রতত্র ময়লা ফেলে তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

পরিদর্শনকালে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফুল ইসলাম, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা নাছিমা খানম এবং স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরবৃন্দ।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page