themeswala
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/swadhin/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114
মাদকাসক্ত কাহিনি নিয়ে এর আগে বহু নাটক কিংবা টেলিছবি নির্মিত হলেও চেনা গল্পে নতুন অবতার দেখা গিয়েছে ঈদ উৎসবে সদ্য প্রচারিত হওয়া বিশেষ নাটক ‘রক্ত’ তে। প্রচারে আসার পর এখন পর্যন্ত তুমুল প্রশংসায় ভাসছে নাটকটি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন গ্রুপে দর্শক প্রশংসা বেশ চোখে পড়ার মতো।
আফরীন জামান লীনার গল্পে নাটকটি পরিচালনা করেছেন রাকেশ বসু। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, সাবিলা নূর, শিল্পী সরকার অপু, নরেশ ভূইয়া প্রমুখ। গল্পটি সকলের চেনা জানা হলেও নতুন ও ভিন্ন উপস্থাপন নাটকটিকে দিয়েছে অন্য মাত্রা। সেইসাথে রোমান্টিক চরিত্রের বাইরে অপূর্ব-সাবিলার দুর্দান্ত অভিনয় ও রসায়নে মুগ্ধ দর্শক।
দর্শকদের এমন সাড়ায় উচ্ছ্বসিত নাটকটির সকল কলাকুশলী। অভিব্যক্তি জানাতে গিয়ে নির্মাতা রাকেশ বসু বলেন, ‘রক্ত’ কাজটি থেকে এক কথায় তুমুল সাড়া পাচ্ছি। এমনিতেও অপূর্ব ভাইয়ার কাজ মানুষ দেখে কিন্তু এই কাজটি যারা দেখেছে তারা সবাই অনেক প্রশংসা করছে। তাদের ভাষ্যটা এমন যে, ‘রক্ত’ আউট অব দ্য বক্স’। চেনা গল্পে শিল্পীদের অসাধারণ অভিনয় দর্শকদেরকে খুব বেশি টাচ করেছে। এই রকম অভিনয়, ডেডিকেশন, প্রেজেন্টেশনে অনেক বছর অপূর্ব ভাইকে দেখা যায়নি। দীর্ঘ সময় পর এই কাজে উনি নিজেকেও ছাড়িয়ে গিয়েছেন। আর সাবিলার পারফর্মেন্সও ছিলো এক কথায় অসাধারণ। সাবিলা যেন নিজেকে নতুন করে চিনিয়েছে এখানে। কাজটি নিয়ে এত এত মানুষের ফোন, মেসেজ পাচ্ছি যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। অনুভূতিটাই অন্যরকম, দর্শকদের এই ভালবাসার। তিনি আরও বলেন, একজন পরিচালক হিসেবে এই চেনা গল্পটা নিয়ে যে প্রত্যাশা ছিলো সেটা একশ গুণ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এডিটিং প্যানেলে আমি এবং আমার এডিটর ৬ বার কাজটাকে ব্রাশ আপ করেছি। প্রত্যেকবারই শেষের দিকে গিয়ে দুজনের চোখে পানি চলে এসেছে। আমরা এই গল্পটা নিয়ে কাজ করেছি কিন্তু পারফর্মেন্স লেবেল দেখে চোখের পানি ধরে রাখাটা খুব কঠিন ছিলো। অপূর্ব ভাই, একই রাতে নাটকটা তিনবার দেখেছে। কাজটা দেখার পর সে নিজেও কাঁদতেছিলো। অপূর্ব ভাই তার মেধা, অভিনয় সত্ত্বা দিয়ে অন্য লেবেলে চলে গিয়েছেন। এখন উনি যা যা করবে তার সব আগেরগুলো ছাড়িয়ে যাবে। আমি সারাক্ষণ স্বপ্ন দেখি তাকে ভিন্নভাবে ইউটিলাইজ করার। রোমান্টিক চরিত্রের বাইরে একটু অন্যভাবে উপস্থাপন করতে চেয়েছি এবং উনি তার সেরাটা দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে নাটকটির নাট্যরচয়িতা আফরীন জামান লীনা বলেন, এবার ঈদে আমার তিনটি কাজ প্রচার হয়েছে ফিজিক্স ক্যামিস্ট্রি ম্যাথ, এই মন তোমারই ও রক্ত। ‘রক্ত’ কাজটি নিয়ে যেমনটা আশা করেছিলাম তার চেয়ে অনেক অনেক গুণ বেশি সাড়া পাচ্ছি। একজন নতুন লেখিকা হিসেবে এটা আমার জন্য বিশাল বড় পাওয়া। সবাই এত বেশি প্রশংসা করছেন যে, নিজের চোখের পানিই ধরে রাখতে পারছি না। সবাই অনেক বেশি এপ্রিশিয়েট করছেন, ফোন করে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। এক কথায় প্রচুর রেসপন্স পাচ্ছি।
এই গল্পটির মাধ্যমে আমি এমন একটি মেসেজ দিতে চেয়েছিলাম যে, যারা আসলে মাদক গ্রহণ করে তাদের রক্তে যে ইনফেকশন হয়, সেটার কারণে তারা কাউকে রক্ত দান করতে পারবে কিনা বা আছে কিনা! কয়েকজন ডাক্তারের সঙ্গেও কথা বলেছি এ বিষয়ে। তারা জানিয়েছেন যে, এতে করে তিনটা সমস্যা হতে পারে। আর যারা মাদক নেয় তারা সুইসাইডের দিকে ঝুঁকে পড়ে। কারণ, যারা সিরিঞ্জ নেয় তারা একতা সময় অবসাদ থেকে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়! তখন আমি সেটাকে একটু অন্যভাবে প্রেজেন্ট করার চেষ্টা করি।
কাজটির অভিজ্ঞতা ও শিল্পীদের পারফর্মেন্স সম্পর্কে তিনি বলেন, একদিন, খুব সম্ভবত বারোটার দিকে আমি ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করতেছিলাম, তখন আমার মাথায় দুইটা গল্প আসলো। আমি তখনই রাকেশের সঙ্গে গল্পের থিমটা শেয়ার করি। এরপর অপূর্বকে ফোন দিয়ে জানতে চাই যে, নেশাগ্রস্থ চরিত্র করতে পারবে কিনা! সে রাজি হয় আর বলে, পারবো কিন্ত অবশ্যই যেন সেটাতে ভিন্নতা থাকে, খুবই কমন যেন না হয়; কারণ এরকম গল্পে, চরিত্রে অনেক কাজ হয়েছে। একথা শোনার পর দুপুর দেড়টার দিকে ৫ মিনিটেই গল্পের প্লট সাজিয়ে ফেললাম। এরপর দুইটার দিকে গল্প লিখতে বসে যাই, সেই লিখা শেষ করি রাত সাড়ে এগারোটায়। সাড়ে ৯ ঘণ্টায় গল্প লিখা শেষ করি।
যখন আমরা শুটিংয়ে যাই, তখন আমি শুধু অবাক হয়ে দেখছিলাম। অপূর্ব আর সাবিলার দুইটা শট দেখে আমি চমকে গেলাম। তখনই আমার কাছে মনে হয়েছে এই কাজটি দারুণ কিছু একটা হবে। অপূর্ব অবশ্যই একজন সেরা অভিনেতা কিন্তু এখানে তার ডেডিকেশন আর পারফর্মেন্স দেখে মুগ্ধ হয়ে গেছি। আর সাবিলা তো অসাধারণ অভিনয় করেছে। একটা দৃশ্যে ওর অভিনয় দেখে আমি ওর দিকে শুধু তাকিয়ে ছিলাম। তখন সাবিলা বলতেছিলো হয়নি আপু? এরপর আমি দৌড়ে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরেছি। মেয়েটা এত ভালো করেছে, দুর্দান্ত। কান্নার কোনো দৃশ্যেই সে গ্লিসারিন ব্যবহার করেনি, যা করেছে একদম রিয়েল। অপূর্ব আর সাবিলা দুজন নতুন করে আবারো নিজেদেরকে চিনিয়েছেন। শুধু তারা দুজনই নয়, এই কাজের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকেই দারুণ অভিনয় করেছেন। নরেশ ভুইয়া, অপু দি উনারাও চমৎকার ছিলেন।
জিয়াউল ফারুক অপূর্ব বলেন, রোমান্টিক গল্পেই তো এখন বেশি কাজ করা হয়। সেই জায়গা থেকে এই কাজটা একদমই আলাদা, নেশাগ্রস্থ একটি চরিত্র। অনেকদিন পর এমন একটা চরিত্রে কাজ করেছি যেটা করে আসলেই অনেক তৃপ্তি পেয়েছি। প্রচারের পর তো অনেকের অভিনন্দন পাচ্ছি, ফেসবুকে কাজটি নিয়ে সবার ভালো লাগার কথা দেখছি। কাজটি দর্শক অনেক বেশি পছন্দ করেছেন। আমার কাছে মনে হয়েছে যদি আরও ভালো করতে পারতাম!
সাবিলা নূর বলেন, এবার আমার খুব বেশি কাজ করা হয়নি। প্রত্যেকটা কাজের জন্যই বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। তবে রক্ত নাটকটির এত সাড়া আসলেই মনে একটা অন্যরকম অনুভূতি ফিল করাচ্ছে।