বিশেষ প্রতিনিধি:
স্মার্ট ঢাকা গড়তে কাজ করে যাচ্ছি বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা হবে স্মার্ট সিটি। স্মার্ট ঢাকা গড়তে কাজ করে যাচ্ছি।’
শনিবার (১৩মে) সাড়ে ১১টায় রাজধানীর গুলশান-২ এ নগর ভবনের প্রধান কার্যালয়ের হল রুমে মেয়র হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের তিন বছর পূর্তিতে সংবাদ সম্মেলনে ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএনসিসি মেয়র তার দায়িত্বগ্রহণের তিন বছরে ডিএনসিসির অগ্রগতির সার্বিক চিত্র ও আগামী দুই বছরের কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন।
মেয়র বলেন, ‘সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে তিন বছর আগে দায়িত্ব গ্রহণ করি। আমি জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ। নগরের সেবক হিসেবে চেষ্টা করে যাচ্ছি জনগণের জন্য কাজ করতে। তিন বছর আগে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম সেগুলোর মধ্যে অনেকগুলো কাজ করেছি, আবার কিছু কাজ করা সম্ভব হয়নি। করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য অনেকটা বাধাগ্রস্ত হয়েছি। তবে ঢাকাকে বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সব প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবো।’
তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে ডিএনসিসিতে অনলাইনে সেবা প্রদানের পরিধি বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স প্রদানের পাইলটিং সম্পন্ন করেছি। জুলাইয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।’
মেয়র বলেন, ‘কাউন্সিলরদের সহায়তায় আমরা কাজ করছি। নগরবাসীকে সম্পৃক্ত করে ঢাকাকে বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো। এই তিন বছরে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের যত ধরনের সফলতা আছে তার সকল কৃতিত্ব জনগণের। আর সেই সঙ্গে যত ব্যর্থতা আছে তা আমার নিজের কাঁধে নিলাম।’
এসময় মেয়র কল্যাণপুর রিটেনশন পন্ডে হাইড্রো ইকো পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনায় কি কি থাকছে তা তুলে ধরেন।
রাস্তার সিগন্যাল গুলোকে অটো করা যায় কিনা এমন প্রশ্ন জবাবে মেয়র বলেন, ‘বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে এখন আর সিগন্যাল হাতে চলে না। শুধুমাত্র আমাদের দেশের সিগন্যাল হাতে চলে। ট্রাফিক সিগন্যাল ইস্যু নিয়ে চলতি মাসে মিটিংয়ে বসবো। সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে নিয়ে টেকনিক্যাল সমাধান নিয়ে কাজ করব। আমরাও খুব শিগগিরই ট্রাফিক সিগন্যালকে ডিজিটালে নিয়ে আসব।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশ থেকে একটি সফটওয়্যার নিয়ে এসেছি। লেন ভিত্তিক কাজ পরিচালনার জন্য এ সফটওয়্যার কাজ করবে। যদি কেউ লেন অমান্য করে অথবা অতিরিক্ত গতিতে যদি গাড়ি চালায় তাহলে তার গাড়ির নম্বর পর্যালোচনা করে তার বাড়ির ঠিকানায় জরিমানার স্লিপ চলে যাবে। উন্নত দেশের মতো এমন সিস্টেম উত্তর সিটিতে দ্রুতই চালু হবে।’
মিরপুর ১০ নম্বর শেওড়াপাড়া ও কাজীপাড়া এলাকায় ফুটপাতে চাঁদাবাজি হচ্ছে এ বিষয়ে কি ব্যবস্থা নিবেন এমন প্রশ্নের জবাবে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘চাঁদাবাজি তথ্য পেলে সে যেই হোক তাকে গ্রেপ্তার করতে হবে। কোন চাঁদাবাজি চলবে না। আমি ইতিমধ্যে ডিএমপির সাথে আলাপ করেছি। কারো নামে যদি কোন অভিযোগের প্রমাণ পাই সে যেই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।’
ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিলসহ জলাবদ্ধতা নিরসনের সব প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, গত ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে উত্তর সিটি কর্পোরেশনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন আতিকুল ইসলাম। সেখানে নির্বাচিত হয়ে ডিএনসিসির মেয়র হন তিনি। পরে ওই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন আতিকুল ইসলাম। পরবর্তীতে একই বছরের ১৩ মে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, কাউন্সিলরবৃন্দ এবং ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।