বিশেষ প্রতিনিধি:
অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেছেন, যেসব নারীরা ঘরে কাজ করে অর্থনীতিতে অবদান রাখছে, সেসব নারীদের অবদানের মূল্যায়ন আমাদের জিডিপিতে প্রকাশ করা জরুরি। সরকার জাতীয় অর্থনীতিতে নারীদের গৃহস্থালি কাজের অর্থনৈতিক মূল্য নির্ধারণের বিষয় বিবেচনা করছে। সরকার এ ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ইতোমধ্যে বিবিএস টাইম ইউজ সার্ভে ২০২১ প্রকাশ করেছে। বিআইডিএস নারীদের গৃহস্থালি কাজের অর্থনৈতিক মূল্য নির্ধারণে গবেষণা করছে।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বিশ্বব্যাপী এই সমস্যা যে, আনপেইড কেয়ার ওয়ার্ককে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশ যেহেতু অনেক কিছুরই রোল মডেল, অন্যরা না করলেও যে আমরা করবো না, সেটা না। আমরা গুরুত্ব সহকারে এগিয়ে যাবো। কারণ গৃহস্থালি কাজের মূল্য জিডিপির বাইরে রাখার কোন কারণ নাই। যে সকল লেনদেন টাকায় হয়ে থাকে, সেগুলো বর্তমান হিসাব পদ্ধতিতে জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হয়। বাংলাদেশে গৃহস্থালি কাজের আর্থিক মূল্য কোন পদ্ধতি বা কিভাবে প্রকাশ করা যেতে পারে, সে বিষয়ে বিবিএস, বিআইডিএস বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহ মতামত তুলে ধরতে পারে। এ বিষয়ে আরো কাজ করার সুযোগ রয়েছে। গৃহস্থালি কাজের অর্থনৈতিক মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি নারীদের আর্থিক খাতে অন্তর্ভুক্তি, সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি এবং জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করবে।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি আজ ঢাকায় ব্রাক ইন-এ মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত “Recognition of Unpaid Care work: A Step Towards Financial and Social Empowerment of Women” সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনামের সভাপতিত্বে আজকের সেমিনারের বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউএন উইমেনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি মিজ গীতাঞ্জলী সিং, পিপিআরসির নির্বাহী পরিচালক হোসেন জিল্লুর রহমান।
সেমিনারে মতামত তুলে ধরেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের পরিচালক সালেহা বিনতে সিরাজ, বিআইডিএসএর পরিচালক কাজী ইকবাল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাইমা হক বিদিশা।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক বনশ্রী মিত্র নিয়োগী। সেমিনারে উন্নয়ন সহযোগী ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপান্তরকারী নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে গেছে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায়। বেড়েছে গড় আয়ু, কমেছে শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার। ২০২৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারের অঙ্গীকার, নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা ও নারী উন্নয়নে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং গ্রামীণ নারীদের সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন এবং শ্রমে অংশগ্রণের সুযোগ বৃদ্ধি করা। গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ প্রতিবেদনে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বে ৫৯তম এবং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শীর্ষে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় জানানো হয়, স্যাটেলাইট হিসাবের মাধ্যমে আনপেইড কেয়ারের আর্থিক মূল্য হিসাব করা হয়, যা সরাসরি জিডিপিতে যুক্ত হয় না। এটা দ্বারা নারীর গৃহস্থালি কাজের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। বিশ্বের কয়েকটি দেশ আনপেইড কেয়ারের ক্ষেত্রে স্যাটেলাইট হিসাব অনুসরণ করে।