বিশেষ প্রতিনিধি:
ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে ইউরোপযাত্রা করতে গিয়ে মারা যাওয়া অভিবাসীদের ১২ শতাংশই বাংলাদেশি বলে উঠে এসেছে এক জরিপে। সারা বিশ্বে সমন্বিত চেষ্টা ছাড়া এটা বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার (৭ মে) বিকেলে রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত হোটেল শেরাটনে ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অভিবাসনের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘সমসাময়িক অভিবাসন রাজনীতি, অর্থনীতি এবং ভৌগলিক অবস্থার বাস্তবতায় প্রভাবিত। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা ছাড়া অভিবাসন ব্যবস্থাপনাকে সফল করা সম্ভব নয়। অভিবাসন বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রবাসীদের অবস্থার উন্নতি ঘটাতে ও তাদের নিরাপত্তা দিতে বদ্ধপরিকর। আগামীতে প্রবাসে দক্ষ কর্মী পাঠানোর জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার কাজ করে যাচ্ছে।’
শফিকুর রহমান বলেন, ‘বিচ্ছিন্ন এবং জটিল বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে, নিরাপদ অভিবাসনের জন্য দেশগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টা অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী মনে করেন, সমসাময়িক অভিবাসন রাজনীতি, অর্থনীতি এবং ভৌগলিক অবস্থার বাস্তবতায় প্রভাবিত। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা ছাড়া অভিবাসন ব্যবস্থাপনাকে সফল করা সম্ভব নয়। অভিবাসন বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করবে বলে আশার কথা জানান তিনি।
এক জরিপের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএমের মহাপরিচালক অ্যামি পোপ জানান, ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে ইউরোপযাত্রা করতে গিয়ে মারা যাওয়া অভিবাসীদের ১২ শতাংশ বাংলাদেশি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নিয়মিত অভিবাসন চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে। দেশগুলোর সমন্বিত চেষ্টা ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
এর আগে সকালে সারা বিশ্বের অভিবাসন অবস্থা নিয়ে একটি বৈশ্বিক রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদন প্রকাশের সময় আইওএমের মuহাপরিচালক অ্যামি পোপ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নিয়মিত অভিবাসন চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে। দেশগুলোর সমন্বিত চেষ্টা ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে।’
অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর বলেন, ‘আমাদের শহরের পাশাপাশি ঝুঁকিতে থাকা উপকূল নিয়েও ভাবতে হবে। এসব এরিয়া থেকে মানবপাচার ঘটছে। জলবায়ুর অভিঘাতে ঝুঁকিতে থাকা মানুষ বাধ্য হচ্ছে অবৈধ অভিবাসনে।’
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনীতির রূপান্তরমূলক পরিবর্তনের সাক্ষী হিসেবে, অভিবাসন আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য একটি সহায়ক ভূমিকা পালন করে। অভিবাসনের ভবিষ্যৎ নির্ণয়ের জন্য জলবায়ু, জনসংখ্যা, নগরায়ন ও ডিজিটালাইজেশনের মতো বিভিন্ন বৈশ্বিক রূপান্তরকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ এইগুলোই শেষ পর্যন্ত অভিবাসনের ভবিষ্যৎ নির্ণয় করে।’
এসময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজি ফেরদৌসী শাহরিয়ারের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন কি-নোট বক্তা ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকোনোমিক বিভাগের সহযোগী প্রফেসর চিন্ময় তুম্বী, প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন সাবেক সচিব প্রফেসর শহীদুল হক, বাংলাদেশস্থ ইতালিয়ান রাষ্ট্রদূত এইচ ই মি. এনটোনিও এলেসান্দ্রো, ইনস্টিটিউট ফর পলিসি অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড গভঃ (আইপ্যাক) এর চেয়ারম্যান প্রফেসর সাঈয়েদ মনির খসরু, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য সাংসদ জারা জেবিন মাহবুব এবং আইওএম এর বাংলাদেশ মিশনের প্রধান আব্দুসসাত্তার ইসোভ।