বিশেষ প্রতিনিধি:
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) স্মার্ট পশুর হাটে ক্রেতা বিক্রেতারা নিরাপদ লেনদেনের সুবিধা পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (২৭ জুন ২০২৩) দুপুরে রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ি কোরবানির পশুর হাট পরিদর্শনকালে ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম এ কথা বলেন।
শুরুতেই মেয়র আতিকুল ইসলাম পশুর হাটে ডিজিটাল লেনদেনের জন্য নির্মিত বুথ পরিদর্শন করেন। এসময় ডিজিটাল বুথে আগত ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মেয়র বলেন, ‘গতবছর পরীক্ষামূলকভাবে স্মার্ট হাট শুরু করেছিলাম। জনগণের ব্যাপক সাড়া পাওয়ায় আমরা এবছর ৮টি হাটে ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেন ব্যবস্থা রেখেছি। এখানে এসে দেখলাম একজন ক্রেতা যে গরুটি পছন্দ করেছেন সেই পরিমান টাকা তিনি সঙ্গে নিয়ে আসেন নাই। কিন্তু ডিজিটাল পদ্ধতিতে তিনি তার ব্যাংক একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করে পছন্দের গরুটি কিনেছেন। আবার একজন বিক্রেতা গরু বিক্রির এতোগুলো টাকা সঙ্গে বহন না করে হাটেই ডিজিটাল বুথে ব্যাংক একাউন্ট খুলে তার একাউন্টে জমা করেন। ডিএনসিসির স্মার্ট হাটের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার ফলেই এটি সম্ভব হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কোরবানির পশুর হাটে বিপুল সংখ্যক ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটেছে। হাটের সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা রেখেছি। হাটগুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। পশুর হাটের বর্জ্য পরিষ্কার করা সহ যেসব শর্ত দেয়া হয়েছে ইজারাদারদের সেগুলো পালন করতে হবে। আমি গতবছরও শর্ত ভঙ্গ করায় জরিমানা করেছিলাম। এবছরও কোন শর্ত ভঙ্গ করলে ইজারাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি তাদের জমাকৃত অর্থ বাজেয়াপ্তও করা হবে।’
এসময় তিনি বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে কোরবানির পশুর হাটগুলো মনিটরিংয়ের জন্য একটি তদারকি টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিম কোরবানির হাটগুলো মনিটরিং করছে।’
বৃক্ষরোপণে পশুর হাটের গোবর ব্যবহার করা হবে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘ডিএনসিসি থেকে ইতিমধ্যে ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম শুরু করেছি। এবছর কোরবানির পশুর হাটের গোবরগুলো সংগ্রহ করে বৃক্ষরোপণে ব্যবহার করা হবে। ইতিমধ্যে গোবর সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। গোবরগুলো সংরক্ষণ করে শুকিয়ে গাছের বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করবো।’
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘৮ ঘন্টায় কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করার সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ঈদের দিন দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু হবে। রাত ১০টার মধ্যে সকল বর্জ্য অপসারণ করা হবে। যে ওয়ার্ড আগে বর্জ্য পরিষ্কার করবে সে ওয়ার্ডকে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হবে।’
এসময় ৮ ঘন্টায় বর্জ্য অপসারণ সম্পন্নের জন্য সবাইকে সহযোগিতার আহবান করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘গতবছর নগরবাসীর সহযোগিতায় দ্রুত সময়ে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করতে পেরেছি। আমি এবছরও নগরবাসীর সহযোগিতা চাই। ডিএনসিসির প্রায় ১১ হাজার কর্মী কাজ করবে। কাউন্সিলরদের মাধ্যমে পলি ব্যাগ, ব্লিচিং পাওডার ও স্যাভলন বিতরণ করা হয়েছে।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে ডিএনসিসি মেয়র কোরবানির পশুর হাট ঘুরে দেখেন এবং ক্রেতা বিক্রেতাদের মাঝে কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় করনীয় বিষয়ক লিফলেট বিতরণ করেন।
পশুর হাট পরিদর্শনে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেঃ জেনাঃ এ.কে.এম শফিকুর রহমান, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা (অ.দা.) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, কাউন্সিলরবৃন্দ এবং ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।