themeswala
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/swadhin/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114নিউজ ডেস্ক: হিজরি ক্যালেন্ডারের জিলহজ মাসের ১০ তারিখ পবিত্র ঈদুল আজহার দিন ইসলামে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ দিন। কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঈদুল আজহার দিনের শপথ করেছেন। আল্লাহ বলেন,
وَ الۡفَجۡرِوَ لَیَالٍ عَشۡرٍ وَّ الشَّفۡعِ وَ الۡوَتۡرِ
শপথ ভোরবেলার, শপথ দশ রাতের, শপথ জোড় ও বেজোড়ের। (সুরা ফাজর: ১-৩)
জাবের (রা.) বৰ্ণনা করেন যে, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এ আয়াতে দশ হচ্ছে জিলহজ মাসের দশ দিন, বেজোড় হচ্ছে আরাফার দিন আর জোড় হচ্ছে কোরবানির দিন। (মুসনাদে আহমদ: ৩/৩২৭)
হাদিসে কোরবানির দিনকে দিনসমূহের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বলা হয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবনে কুরত থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
إِنَّ أَعْظَمَ الأَيَّامِ عِنْدَ اللَّهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَوْمُ النَّحْرِ ثُمَّ يَوْمُ الْقَرِّ
দিনগুলোর মধ্যে আল্লাহর নিকট সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হল, নহরের দিন (অর্থাৎ কোরবানির প্রথম দিন) এরপর এর পরবর্তী দিন ( অর্থাৎ কোরবানির দ্বিতীয় দিন)। (সুনানে আবু দাউদ: ১৭৬৫)
ঈদুল আজহার ৬ আমল:
১. গোসল, সুগন্ধি ও উত্তম পোশাক
ঈদের দিন গোসল করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা ও উত্তম পোশাক পরিধান করা সুন্নত। ফজরের আগে অথবা ঈদের নামাজের আগে গোসল করা যায়। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদের দিন গোসল করতেন, সুগন্ধি ব্যবহার করতেন এবং তার সবচেয়ে সুন্দর পোশাকটি পরিধান করতেন। সাহাবায়ে কেরামের মধ্যেও ঈদ উপলক্ষ্যে বিশেষ সাজ সজ্জা গ্রহণ করা, উত্তম ও মূল্যবান পোশাক পরিধান করার প্রচলন ছিলো।
২. তাকবির
৯-ই জিলহজের ফজর থেকে ১৩ই জিলহজের আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরয নামাজের পর তাকবির বলা ওয়াজিব। পুরুষরা উঁচু আওয়াজে ও নারীরা নিচু আওয়াজে তাকবির বলবে। এটাকে তাকবিরে তাশরিক বলা হয়। এ ছাড়া ঈদুল আজহার দিন ঈদগাহে যাওয়ার সময়, ঈদের খুতবায়, ঈদের নামাজ থেকে ফেরার সময়, পশু কুরবানির সময় বার বার তাকবির বলা সুন্নত। তাকবির ঈদুল আজহার বিশেষ আমল। তাশরিক ও ঈদের তাকবির বলতে হবে এভাবে, “আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।”
৩. নামাজ
নামায ঈদুল আজহার ওয়াজিব আমল। কোরবানি করতে হবে ঈদের নামাজ আদায় করার পর। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদের নামাজের খুতবায় বলেছিলেন, আজকের এই দিনে প্রথম আমরা ঈদের সালাত আদায় করবো। এরপর ফিরে গিয়ে কোরবানি করবো। যে ব্যাক্তি এভাবে করলো, সে আমার সুন্নত অনুসরণ করলো। (সহিহ বুখারি: ৫৫৬০)
ঈদুল আজহার নামায সুর্যোদয়ের পর থেকে দিপ্রহরের পূর্ব পর্যন্ত আদায় করা যায়। সূর্য একটু ওপরে ওঠার পর দ্রুত ঈদের নামাজের আয়োজন করা উত্তম; যেন দ্রুত কোরবানি করা যায় এবং কোরবানির গোশত দিয়ে ঈদের দিনের খাওয়া-দাওয়া শুরু করা যায়।
৪. ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা
ঈদের দিন শুভেচ্ছা বিনিময় করা, পরস্পরের জন্য দোয়া করা, খোঁজ খবর নেওয়া সুন্নত। ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করার জন্য নির্দিষ্ট কোনো বাক্য বা শব্দ নেই। যে কোনো উত্তম ও সুন্দর কথার মাধ্যমেই শুভেচ্ছা জানানো যায়। সাহাবায়ে কেরাম ঈদের দিন দেখা হলে পরস্পরের জন্য দোয়া করতেন, ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম’ অর্থাৎ আল্লাহ তোমার ও আমার নেক আমলগুলো কবুল করুন।
৫. পশু জবাই বা কোরবানি
ঈদুল আজহার দিন আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পশু জবাই করা প্রাপ্তবয়স্ক, সামর্থ্যবান পুরুষ ও নারীদের ওপর ওয়াজিব। আল্লাহ তার প্রিয় রাসুলকে নামাজ আদায়ের সাথে কোরবানি করার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন,
اِنَّاۤ اَعۡطَیۡنٰکَ الۡکَوۡثَرَ فَصَلِّ لِرَبِّکَ وَ انۡحَرۡ اِنَّ شَانِئَکَ هُوَ الۡاَبۡتَرُ
নিশ্চয় আমি তোমাকে কাওসার দান করেছি। সুতরাং তোমার রবের উদ্দেশে সালাত আদায় করো ও কোরবানি করো। নিশ্চয় তোমার প্রতি শত্রুতা পোষণকারীই নির্বংশ। (সুরা কাওসার: ১-৩)
আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
مَن كان له سَعَة ولمْ يُضَحِّ فلا يَقْرَبَنّ مُصَلّانا
যার কোরবানি করার সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু কোরবানি করে না সে যেন আমাদের ইদগাহে না আসে। (সুনানে ইবনে মাজা: ৩১২৩)
৬. কোরবানির মাংস খাওয়া ও খাওয়ানো
আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদুল আজহার দিন ঈদের নামাজের আগে কিছু খেতেন না। ঈদের নামাজ ও কোরবানির পর গোশত রান্না হলে খেতেন। নিজের কোরবানির মাংস খাওয়া ও অভাবীদের খাওয়ানো ঈদের দিনের একটি বিশেষ আমল। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন,
فَکُلُوۡا مِنۡهَا وَ اَطۡعِمُوا الۡقَانِعَ وَ الۡمُعۡتَرَّ
তোমরা তা থেকে খাও এবং খাওয়াও মানুষের কাছে হাত পাতে না এমন অভাবীদের এবং চেয়ে বেড়ায় এমন অভাবীদের। (সুরা হজ: ৩৬)
সুতরাং মাংস চাইতে আসা ভিক্ষুকদের যেমন কিছু গোশত দান করা উচিত, কুরবানি দিতে পারেনি এমন আত্মীয়-স্বজন-প্রতিবেশীদের কথাও বিশেষভাবে মনে রাখা উচিত, তাদের ঘরেও কুরবানির গোশত পাঠানো উচিত। যেন ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে সবাই ঈদের আনন্দে শরিক হতে পারে।