বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৭ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি
পাওনা টাকা চাওয়ার জেরে খুন:র‌্যাব
/ ৪৯ Time View
Update : শুক্রবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২৪, ৯:৩৯ পূর্বাহ্ন

বিশেষ প্রতিনিধি:

ঢাকা: র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, যাত্রীবাহী বাসের কাউন্টারে চাকরি সূত্রে দুজনের পরিচয় ও দুইজনের মধ্যে আর্থিক লেনদেন। একপর্যায়ে পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ার জেরে বাগ-বিতন্ডা, শেষ পর্যন্ত এর জেরে চোখ উপড়ে নিয়ে নৃশংস হত্যা করা হয়।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের এশিয়ান হাইওয়ের পাশ থেকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির চোখ উপড়ানো মরদেহ পাওয়া যায়। মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করে দ্রুততম সময়ে ক্লুলেস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর উত্তরা, গাজীপুরের টঙ্গী ও লক্ষীপুরের রায়পুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারীসহ জড়িত পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. নিজাম উদ্দিন (৩৬), মো. সোহাগ (৩৮), জহিরুল ইসলাম (৪৮), রনি হোসেন (২৩) ও বাদশা (২৩)।

৯ জানুয়ারি সকালে রূপগঞ্জের এশিয়ান হাইওয়ে রাস্তার পাশে একটি চোখ উপড়ানো অজ্ঞাতনামা মরদেহ দেখে স্থানীয় লোকজন নিকটস্থ র‌্যাব ক্যাম্পে জানান।

র‌্যাব-১-এর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিকভাবে মরদেহের সঙ্গে থাকা মানিব্যাগে বিভিন্ন নথিপত্র এবং ওআইভিএস ডিভাইসের মাধ্যমে অজ্ঞাতনামা মরদেহের নাম-পরিচয় শনাক্ত করেন।

পরে ভিকটিমের পরিবারে মরদেহটি শনাক্ত করে এবং ভিকটিমের মা বাদি হয়ে রূপগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

খন্দকার মঈন বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে গোয়েন্দা নজরদারির ধারাবাহিকতায় মূল পরিকল্পনাকারী মো. নিজাম উদ্দিনসহ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন।

এই কর্মকর্তা বলেন, চাঁদপুরের বাসিন্দা ভিকটিম ফারুক হোসেন (২৬) স্ত্রী-সন্তানসহ তুরাগের বাউনিয়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তিনি গাজীপুরের টঙ্গী চেরাগআলী এলাকায় ঢাকা এক্সপ্রেস পরিবহনের ‘টিকিট কাউন্টার ম্যান’ হিসেবে বেশ কিছুদিন কাজ করতেন। আর কাউন্টার ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন গ্রেপ্তার নিজাম উদ্দিন।

পরিচয় ও সম্পর্কের সূত্রে গ্রেপ্তার নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে ভিকটিম ফারুকের বিভিন্ন সময় আর্থিক লেনদেন হয়। একপর্যায়ে এর জেরে সম্পর্কের অবনতি হয় এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের শুরু হয়।

গত ০৮ জানুয়ারি নিজাম উদ্দিনের কাছে ভিকটিম ফারুক পাওনা টাকা চাইলে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। নিজাম ভিকটিম ফারুকের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য সোহাগ, জহিরুল, রনি ও বাদশাসহ আরও কয়েক জনের সঙ্গে পরিকল্পনা করেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ৮ জানুয়ারি রাতে নিজাম মোবাইলে ফোন করে ভিকটিম ফারুককে টাকা নেওয়ার জন্য কাউন্টারে আসতে বলেন। ফারুক টাকা নিতে কাউন্টারে গেলে নিজামের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে সোহাগ, জহিরুল, রনি ও বাদশা ভিকটিমকে মারধর করেন।

একপর্যায়ে নিজামের নির্দেশে সোহাগ, জহিরুল, রনি ও বাদশা ভিকটিম ফারুককে জোরপূর্বক ঢাকা এক্সপ্রেসের একটি খালি বাসে উঠিয়ে ফারুকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করেন। এরপর সোহাগ ও রনি ভিকটিম ফারুকের হাত-পা চেপে ধরে এবং বাদশা বাসে থাকা টুলবক্স থেকে স্ক্রু ড্রাইভার নিয়ে ভিকটিম ফারুকের বাম চোখ উপড়ে ফেলেন।

মঈন বলেন, ভিকটিম ফারুকের মৃত্যু নিশ্চিত হলে হত্যার ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে মরদেহটি বাসে করে রূপগঞ্জের এশিয়ান হাইওয়ে পাশে রঘুরামপুর এলাকার নির্জন রাস্তার পাশে ফেলে বাসটি নিয়ে লক্ষীপুরে পালিয়ে যান তারা।

জড়িতরা গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যান বলেও জানান তিনি।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page