শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪১ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি
নাশকতা বা আগুন দেওয়ার যে কোনো ছবি লন্ডনে পাঠালেই পুরস্কার:ডিবি প্রধান 
/ ৪৫ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩, ৯:৪৮ পূর্বাহ্ন

বিশেষ প্রতিনিধি:

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে ককটেল হামলার মূল পরিকল্পনাকারী বোমা বিশেষজ্ঞ মুকিত ওরফে বোমা মাওলানাকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) পুরান ঢাকার চকবাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবির লালবাগ বিভাগ।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানায়, গ্রেফতার বোমা মাওলানা গত ২৭ অক্টোবর থেকে গত ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত গানপাউডার সংগ্রহ করে প্রায় ৪০০ বোমা তৈরি করেন। পরে এসব বোমা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সাপ্লাই করেন। বোমা বানাতে গানপাউডার সাপ্লাই দেন যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। নাশকতা কিংবা আগুন দেওয়ার যে কোনো ছবি লন্ডনে পাঠানো হলে তাদের পুরস্কৃত করা হতো। বোমা মাওলানার সাপ্লাই করা বোমার মধ্যে একটি বোমা ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিস্ফোরণ করা হয়।

তিনি বলেন, আমরা অনেকদিন ধরে মুকিত হোসাইন ওরফে বোমা মাওলানাকে খুঁজছিলাম। তার নাম হলো মুকিত, তবে সবাই তাকে ডাকে ‘বোমা মাওলানা’ নামে। একসময় সে আলিয়া মাদরাসা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও সভাপতি ছিলেন। পরবর্তীসময়ে ছাত্রদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৩-১৪ সালে বোমা বানাতে গিয়ে তার ডান হাতের কব্জি উড়ে যায়। এরপর থেকে তার নাম হয় বোমা মাওলানা। দলীয় আনুগত্য এবং উগ্র ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তাকে মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনোনীত করেন স্বয়ং তারেক রহমান।

হারুন অর রশীদ বলেন, মহানগর জজ কোর্ট প্রাঙ্গণে যে বোমাটি বিস্ফোরিত হয়েছিল তার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন বোমা মাওলানা। ২৭ অক্টোবর রাতে মতিঝিল ব্যাংক কলোনিতে যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পাঠানো ১০ কেজি গানপাউডার বোমা মাওলানা রিসিভ করে ভাটারা থানা যুবদলের আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম নয়নের কাছ থেকে। এই গানপাউডার দিয়ে গত ২৭ অক্টোবর থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত কয়েক দফায় প্রায় চারশ হাতবোমা তৈরি করে সে। পরে এসব বোমা সাপ্লাই দেওয়া হয় বিভিন্ন থানা যুবদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবদের কাছে। তার সরবরাহ করা হাতবোমা থেকে একটি বোমা যুবদলের সদস্য সোহেল খান ও অভি আজাদ চৌধুরীর নির্দেশে ঢাকা মহানগর জজ কোর্ট আদালত প্রাঙ্গণে বিস্ফোরিত করে ওয়ারীর আব্দুল হামিদ ভূঁইয়া ও তার স্ত্রী হাফসা আক্তার।

জিজ্ঞাসাবাদে মুকিত ওরফে বোমা মাওলানা ডিবিকে জানায়, প্রতিটি যানবাহনে আগুন দেওয়ার জন্য অগ্নিসংযোগকারীকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এছাড়া বিস্ফোরণ ঘটানো ও মশাল মিছিলের জন্য ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয় মহানগর যুবদলের পক্ষ থেকে। এছাড়া ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে প্রায় ৬-৭ হাজার লোকের মিছিলে নেতৃত্ব দেয় বোমা মাওলানা।

ডিবি প্রধান আরও বলেন, নাশকতার জন্য যারা বোমা বানায় এবং বাস ও ট্রেনে যারা নাশকতা করে তাদের অনেকের নাম পেয়েছি। এই বোমা মাওলানা ২৭ অক্টোবর একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিল। আর সেখানে বসে পরিকল্পনা করছিল কোথা থেকে বোমা বানানোর সরঞ্জাম সংগ্রহ করা যায় আর কাকে দিয়ে এসব বোমা বিস্ফোরিত করে মানুষকে পঙ্গু করা যায়।

তিনি বলেন, লন্ডন থেকে আসা নির্দেশে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক ও ভীতি ছড়ানোর কাজে ঢাকা মহানগর যুবদল দক্ষিণে ৮টি টিম গঠন করা হয়। মুকিতের দায়িত্ব ছিল কেন্দ্রীয় যুবদল ও মহানগর যুবদলের সঙ্গে সমন্বয় করা। সমন্বয় করে বোমা বানিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানো। এছাড়া গ্রেফতার মুকিত ওয়ার্ড এবং থানা পর্যায়ের যুবদল কর্মীদের দিয়ে যানবাহনে আগুন দেওয়ায় কমপক্ষে ৬টি ঘটনার সমন্বয় করেছে। আমরা তার কাছ থেকে অনেক তথ্য পেয়েছি।

এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেফতার বোমা মাওলানা যুবদলের কর্মীদের শিখিয়ে দিত কীভাবে আগুন লাগাতে হবে। আর তাদের বলত তার বলা কায়দায় যদি আগুন লাগানো হয় আর সেই ছবি যদি লন্ডনে পাঠানো হয় তাহলে তাদের পুরস্কৃত করা হবে।

যুবদল সভাপতি টুকুকে গ্রেফতারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে হারুন বলেন, তাকে গ্রেফতারের জন্য আমরা চেষ্টা করছি।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page