বিশেষ প্রতিনিধি:
নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আল্লাহর দলের দুই নায়েবে আমীরসহ ৫ জঙ্গি’কে গ্রেফতার করেছে পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট – এটিইউ। শনিবার বিকেলে কুমিল্লা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
রবিবার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর বারিধারায় এন্টি টেররিজম ইউনিটের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানএন্টি টেররিজম ইউনিটের মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন, বিপিএম, পিপিএম-বার পুলিশ সুপার (অপারেশনস্) অতিরিক্ত দায়িত্বে (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইং)।
নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আল্লাহর দল’ এর গ্রেফতারকৃত সদস্যরা হলেন:
(১) মোঃ মশিউর রহমান @ রাসেল (২) আবু সুফিয়ান ((৩) সালা উদ্দিন ৪) আলাউদ্দিন ৫) মোঃ জুলহাস হোসেন @ জুলাস কে গ্রেফতার করেছে। এই সময় গ্রেফতারকৃত আসামীদের নিকট হতে ৮টি মোবাইল ফোনসহ বিপুল পরিমাণ সাংগঠনিক দলিলাদি জব্দ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এটিইউ পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন জানান, সম্প্রতি কুমিল্লা অঞ্চলে জঙ্গি সংগঠন “আল্লাহর দলের” ২০ থেকে ২৫ জন সদস্য একত্রিত হবার চেষ্টা করছিল। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারা কোচিং সেন্টারের নাম করে কুমিল্লাতে একটি বাসা ভাড়া নেয়। কুমিল্লার কতোয়ালি এলাকাতে ভাড়া নেয়া কোচিং সেন্টারে মিটিং এর আয়োজন করা হয়। মিটিং এর দিন এন্টি টেররিজম ইউনিট অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশি অভিযানে দলনেতা মশিউর রহমান, তিনি কুমিল্লা অন্চলের প্রধান, দুই নায়েবে আমিরসহ মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।এসময় অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন আসামী পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন পুলিশ সুপার (অপারেশনস্) অতিরিক্ত দায়িত্বে(মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইং) জানান,অসংখ্য সদস্য এ জঙ্গী সংগঠনটির সদস্য। প্রতি জেলায় এ সংগঠনটির সদস্য সক্রিয় আছে। একইসাথে নিষিদ্ধ দলটি আর্থিকভাবে অন্য জঙ্গী দলের চেয়ে শক্তিশালী।
এন্টি টেররিজম ইউনিটের এই কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীগণ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আল্লাহর দল’ এর সক্রিয় সদস্য। আসামীগণ পরস্পর যোগসাজোসে,সহায়তায় সমর্থন দিয়ে সংঘবদ্ধভাবে বাংলাদেশের অখন্ডতা, সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার জন্য এবং জনসাধারণের ভিতর আতংক সৃষ্টি, ধর্মীয় উগ্রবাদী মতাদর্শ প্রচারের মাধ্যমে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ও নাশকতা ঘটানোর উদ্দেশ্যে গোপন বৈঠকে, বিভিন্ন পরিকল্পনা, দাওয়াতি কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ নিয়মিতভাবে একত্রিত হয়ে তাদের নিষিদ্ধ কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছিল।
এন্টি টেররিজম ইউনিটের ছানোয়ার হোসেন জানান, সালাউদ্দিন জেলা প্রতিনিধি এবং মোঃ জুলহাস হোসেন @ জুলাস সদস্য হিসেবে সংগঠনকে সমর্থন, সংগঠনের জন্য চাদা প্রদানও চাঁদা উত্তোলন, পরিকল্পনা ও প্ররোচনার দায়িত্ব পালন করে আসছিল। তারা ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসকে পুঁজি করে ধর্মের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে তাদের আদর্শের অনুকূলে সদস্য সংগ্রহপূর্বক চাঁদা আদায়ের মাধ্যমে তাদের দলীয় কার্যক্রমৎপরিচালনা করে আসছিল।
এন্টি টেররিজম ইউনিটের এই কর্মকর্তা জানান,গ্রেফতারকৃত আসামী ও তাদের পলাতক সহযোগীগণ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আল্লাহর দল’ এর সদস্য হয়ে, সংগঠনকে সমর্থন করে, পরস্পরকে সহযোগীতা করে প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে প্ররোচিত করে বাংলাদেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করাসহ দেশের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব বিনষ্ট, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহ ধ্বংস, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার মামলা নং-৭৬, তারিখ-২৬/১১/২০২৩ খ্রি. ধারা-সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ (সংশোধনী ২০১৩) এর ৮/৯(৩)/১০/১২/১৩ রুজু করা হয়েছে।