themeswala
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/swadhin/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114নিজস্ব প্রতিবেদক:
আজ ২৬ শে মে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ‘World Health Assembly’ র আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। এদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহোদয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল একটি কর্মব্যস্ত দিন অতিবাহিত করেন।
দিনের শুরুতে অসংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর মাধ্যমে ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রমকে উদ্বুদ্ধ করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ডা: টেড্রোস আধানোম ঘেব্রেইসাস বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক প্রতিনিধিগণ এবং বিভিন্ন পর্যায়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ সকল পর্যায়ের প্রতিনিধিগণের অংশগ্রহনে ‘Walk The Talk’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন এবং উপস্থিত মন্ত্রীবর্গ ও প্রতিনিধিবর্গের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ এই আয়োজনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন। মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা: সামন্ত লাল সেন মহোদয়ের নেতৃত্বে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, ডা: মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন), বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি সহ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের প্রতিনিধিগণ অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
দিনের দ্বিতীয়ার্ধে কমনওয়েলথভুক্ত কয়েকটি দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের সাথে
‘Digital Health Maturity as a Corner Stone of Health Services’ বিষয়ক একটি সাইড ইভেন্টে অংশ নিয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডিজিটাল প্রযুক্তির কার্যকর ও উদ্ভাবনী প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের যুগান্তকারী উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন। স্বল্প সময়ে সকলের দোড়ঁগোড়ায় কার্যকরী স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে ডিজিটাল ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য এবং এই খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের জন্য রোল মডেল হতে পারে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মত প্রকাশ করেন। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব এসময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।
পরবর্তীতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল, ডা: সানিয়া নিশতার, প্রধান নির্বাহী, GAVI, the Vaccine Alliance এর নেতৃত্বে GAVI র প্রতিনিধি দলের সাথে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ফলপ্রসূ আলোচনা করেন।
আলোচনার শুরুতে মন্ত্রী কোভিড-১৯ অতিমারী মোকাবিলায় গ্যাভি’র পক্ষ থেকে ভ্যাক্সিনসহ সার্বিক সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে ভ্যাক্সিন উৎপাদনে বাংলাদেশের সক্ষমতা তৈরিতে প্রযুক্তি স্থানান্তর বিষয়ে কারিগরি সহায়তার জন্য সংস্থাটির প্রতি আহবান জানান। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কোভিড অতিমারী নিয়ন্ত্রণ ও টিকাদান কার্যক্রমে বাংলাদেশ সরকারের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের জন্য অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন এবং Vaccine Plant স্থাপনে বাংলাদেশকে সকল প্রকার কারিগরি সহায়তা প্রদানে আশ্বাস দেন। পাশাপাশি গ্যাভি’র কারিগরি সহায়তায় আগামী জুন মাসে প্যারিসে অনুষ্ঠিতব্য ভ্যাক্সিন প্লান্ট স্থাপন বিষয়ক সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান।
২০২৬ সালে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য তালিকাভুক্ত হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী তার পর থেকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের টিকাদান কার্যক্রমে GAVI র অনুদানের সুযোগ সীমাবদ্ধ হলেও, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অভিষ্ট সূচক অর্জনে বাংলাদেশকে সহযোগিতার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন। গ্যাভির পক্ষ থেকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সম্ভাব্য সকল সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।
পরবর্তীতে, ‘Galvanizing Political Commitment for Maternal, Neonatal and Child Health’ বিষয়ে একটি প্যানেল ডিসকাশনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। মাতৃ ও শিশু মৃত্যু রোধে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ও তা আরও কমিয়ে আনতে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য, কর্মপরিকল্পনা ও উদ্যোগের কথা মন্ত্রী সকলের সামনে তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু রোধে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিকে রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, তার সরকারের সদিচ্ছা এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে মাতৃ ও শিশু মৃত্যু রোধে গঠিত Global Leaders Network for Womens, Children and Adoloscent Health এ অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করেন। আলোচনায় আফ্রিকার দেশগুলোতে উচ্চ মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণে বাংলাদেশের উদ্যোগ সমূহ অন্যদের কাছে উদাহরণ হতে পারে বলে সকলে মত প্রকাশ করেন।
সকল দ্বি-পাক্ষিক ও সাইড মিটিং এ মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে জাহাঙ্গীর আলম, সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন), পরিচালক, পরিকল্পনা ও গবেষণা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, যুগ্ম সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগসহ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পাশাপাশি, দুপুর ২:০০ – ৪:০০ ঘটিকায় জাতিসংঘ ভবনে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক, সায়মা ওয়াজেদের সভাপতিত্বে বাংলাদেশসহ আঞ্চলিক দেশগুলোর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে টেকনিক্যাল ব্রিফিং সেশন অনুষ্ঠিত হয়। জলবায়ু পরিবর্তন, এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টেন্স, অতিমারীর ঝুঁকি সহ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ৭৭ তম World Health Assembly তে এ অঞ্চলের দেশগুলোকে একযোগে ‘Regional One Voice’ হিসেবে কাজ করতে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।