শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪০ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি
সরকার অনেক ঋণ নিলে সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে
/ ৪১ Time View
Update : শুক্রবার, ৯ জুন, ২০২৩, ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন

 

বিশেষ প্রতিনিধি:

“প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস বিশেষত ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে বেশি ঋণ নেয়ার প্রাক্কলন করা হয়েছে, যা বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। বিপুল পরিমাণ ঋণ নিলে সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে। বিদ্যুৎ-জ্বালানির সংকট মেটাতে বিশেষ দিক-নির্দেশনা নেই। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ স্লোগান থাকলেও আইসিটি যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক-কর বাড়ানো হয়েছে।

অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা নতুন আয়কর আইন প্রণয়নে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এসব কারণে প্রস্তাবিত বাজেটকে পুরোপুরি ব্যবসাবান্ধব বলা যাবে না।”

রাজধানীর বনানীতে হোটেলে শেরাটনে বাজেটোত্তর আলোচনা সভার আয়োজন করে আমেরিকার চেম্বার অফ কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম)। সেখানে আলোচকরা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নেন অ্যামচেমের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ, পলিসি রিসার্স ইন্সটিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ।

মূল প্রবন্ধে ড. মনসুর বলেন, বাজেট ঘাটতি মেটাতে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নেয়ার প্রাক্কলন করা হয়েছে। বেসরকারি ব্যাংকে উচ্চ সুদ হওয়ায় ইতিমধ্যেই চলতি অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকারকে ঋণ নিতে হবে।

টানা ২ বছর এতো বিপুল পরিমাণ ঋণ নিলে সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে। যার দরুন মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে। আর টাকা ছাপিয়ে ঋণ নেয়া অর্থনীতিকে ধ্বংস করার শামিল। এক্ষেত্রে সোমালিয়া, আফগানিস্তান ভালো উদাহরণ হতে পারে।

মূল প্রবন্ধের ওপর প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে সৈয়দ এরশাদ বলেন, বাজেটকে পুরোপুরি ব্যবসাবান্ধব বলা যাবে না।

রাজস্ব খাত সংস্কারে উল্লেখযোগ্য দিক-নির্দেশনা চোখে পড়েনি। যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, সেগুলো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে। ঘাটতি মেটাতে বিপুল অংকের ব্যাংক ঋণের কথা বলা হয়েছে। এতে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুত্-জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতেই হবে।

নতুন আয়কর আইনের বিষয়ে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মজিদ বলেন, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের সময় ব্যবসায়ীরা বিরোধিতা করেছিল। এমনকি যেসব সংসদ সদস্য ভোট দিতে সংসদে আইন পাস করেছে, পড়ে তারাও বিরোধিতা করেছে। প্রতিটি মন্ত্রণালয় বা সংস্থা নিজস্ব চিন্তা-চেতনার ভিত্তিতে আইনের খসড়া বানিয়ে থাকে। সমাজের এর প্রভাব কী পড়বে তা খুব কম বিবেচনা করা হয়। নতুন আয়কর আইনের ক্ষেত্রে তেমন যাতে না হয় সে জন্য সংসদ সদস্যদের আইনটি ভালোভাবে পড়া উচিত।

ড. মনসুর বলেন, নতুন আইন বাস্তবায়নের তাড়াহুড়া করা ঠিক হবে না। নতুন আয়কর আইনটি অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানদন্ডে উত্তীর্ণ হতে হবে। স্বদেশী চিন্তা-ভাবনার বহি:প্রকাশ না থাকে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনে আইনটি আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দ্বারা ভেটিং করানো যেতে পারে। কারণ আইনটির খসড়া যারা করেছেন, তাদের আন্তর্জাতিক চর্চা সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই বলা যায়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, বলা হচ্ছে আইএমএফের চাপে সরকার এটা করছে, ওটা করছে। এটা ঠিক নয়। আইএমএফ ডাক্তারের মতো, তারা হয়তো প্রেসক্রিপশন দেয়, চাপ দেয় না। ফ্রি মার্কেট ইকোনমিতে যে কেউ এটা দিতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ঋণ আবেদন করার পর সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে বাংলাদেশকে ঋণ দিয়েছে আইএমএফ। অথচ অনেক দেশই এ সময় ঋণ চেয়ে পায়নি। কারণ তারা জানে বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা আছে, বাংলাদেশ কমিটমেন্ট বরখেলাপ করে না।

তিনি আরও বলেন, মূল্যস্ফীতি এখন প্রকৃত পশু। নিম্নআয়ের মানুষের সমস্যা হচ্ছে, জ্বালানি সংকটে লোডশেডিং হচ্ছে— সরকার এসব বিষয়ে অবগত আছে। দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে ও জ্বালানি সংকট সমাধানে সরকার কাজ করছে।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page