শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩০ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি
দেশে প্রতিবছর নতুন করে ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন দুই লাখ মানুষ
/ ৪৪ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০২৩, ৯:০৩ অপরাহ্ন

সিনিয়র রিপোর্টার:

দেশে প্রতিবছর দুই লাখ নতুনরোগী ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। জটিল এ রোগের চিকিৎসায় প্রতি রোগী বছরে ব্যয় করছেন ৩ থেকে ৭ লাখ টাকা। এতে এসব পরিবার ঋণগ্রস্ত হয়ে খাদ্যসংকট এবং দারিদ্রসীমার নিচে নেমে যাচ্ছেন। তাদের সহায়তা দিতে একটি সরকারি ফান্ড গঠনের পরামর্শ দেওয়া হয় সেমিনারে।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে আসে। রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আইডিএস রিসার্চ অ্যালমানাক ২০২৩ সম্মেলনের শেষ দিনে গবেষণাটি তুলে ধরা হয়। সংস্থাটির গবেষক ড. আব্দুর রাজ্জাক সরকার উপস্থাপনাটি তুলে ধরেন।

এতে বলা হয়, দেশে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ ক্যানসার রোগী আছেন। তাদের ১৬ শতাংশ ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্ত। আর এসব রোগীদের ৯০ শতাংশই চিকিৎসা পেতে অর্থসংকটের মুখে পড়েন। প্রাথমিক পর্যায়ে সেবা নিতে বছরে ৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা ব্যয় হয়। আর মারাত্মক আকারে ব্যয় হয় ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকার মতো। রোগীর থাকা ও যাতায়াতে বড় একটি পরিমাণ ব্যয় করতে হয়।

ক্যানসারের সেবা গ্রহণের জন্য ৭৭ শতাংশ পরিবার ঋণ করে থাকেন আর ৩৯ শতাংশ পরিবার তাদের সম্পদ বিক্রি করতে বাধ্য হন। ৮৮ শতাংশ পরিবার এ ব্যয় বহন করতে গিয়ে খাদ্যসংকটে পড়েন। তাদের সেবা নিশ্চিত করতে একটি ইন্সুরেন্স চালু করার কথা বলা হয়। ক্যানসার নিয়ন্ত্রণের একটি পদ্ধতিও ঠিক করতে বলা হয়।

এ বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর সায়েদ আব্দুল হামিদ বলেন, ১৩-১৪ শতাংশ পরিবার ক্যানসারের কারণে দারিদ্রসীমার নিচে নেমে যাচ্ছেন। তাদের সহায়তার জন্য সরকারপ্রধানের নেতৃত্বে একটি ফান্ড গঠন করা যায়। প্রয়োজনে মোবাইল গ্রাহকদের কাছ থেকে মাসে ১০ টাকা নেওয়া যেতে পারে। এভাবে ৩ হাজার কোটি টাকা আসতে পারে। সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে সবমিলিয়ে ১০ হাজার কোটি টাকার ফান্ড গঠন করা যাবে। যেখান থেকে ক্যানসার রোগীদের ৫ লাখ টাকা করে সহায়তা করা যাবে।

সেমিনারের আরেকটি সেশনে পোশাক, কৃষি এবং চামড়া খাতের শ্রমিকদের দক্ষতার ঘাটতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে বলা হয়, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধাক্কায় এসব খাতের ৪৭ শতাংশ শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে। শুধুমাত্র পোশাক খাতেই বেকার হবে ২৫ লাখ মানুষ। বর্তমানে এসব খাতে লোকবল সংকটের চেয়ে দক্ষতার ঘাটতি আছে। তবে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কারখানাগুলো ব্যয় করতে চায় না। তবে ৮০ শতাংশ শ্রমিক প্রশিক্ষণ চাচ্ছেন। এমতাবস্থায় শুধুমাত্র বিদেশি অর্থায়নের প্রশিক্ষণ কতটা কাজে দেবে সে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে বলা হয়।

এ বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর সায়েমা হক বিদিশা বলেন, বাজটে শিল্পগুলোকে বিভিন্ন সুবিধা বা প্রণোদনা দেওয়া হয়। এসব প্রণোদনার সঙ্গে যদি প্রশিক্ষণের বিষয়টি শর্ত হিসেবে দেওয়া যায় ,তাহলে তা কাজে দেবে। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুভাশিষ বলেন, শ্রমিকদের বেতন পর্যাপ্ত না। তাই তাদের স্বাস্থ্যবীমা এবং ফ্রি চিকিৎসা নিশ্চিত করা গেলে তারা স্থায়ীভাবে এসব খাতে কাজ করবেন।

দারিদ্র দূরীকরণে একটি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। এতে বলা হয়, গ্রামে স্বপ্ন প্রকল্পের মাধ্যমে একজনের পিছনে ৫৮ হাজার টাকা ব্যয় করে সেখান থেকে ৮৪ হাজার টাকা পাওয়া যাচ্ছে। এভাবে তাদের কাজে লাগিয়ে তাদের জীবনমান উন্নত করা হচ্ছে। এটা শহরাঞ্চলেও বিস্তৃত করার পরামর্শ দেয় বিআইডিএস।

সেমিনার শেষে মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে সিপিডির ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত বছর বাজেটের আগেই যুদ্ধ শুরু হলেও বাজেটে এ নিয়ে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। যদিও তখন বিশ্ব বাজারে দাম বাড়ছিল সব জিনিসের। তাই গবেষকদের পরামর্শ নিয়ে নীতি নির্ধারণের আহ্বান জানান তিনি। সৌদি আরবে ২২ লাখ লোক থাকলেও কেন মাত্র ৩ লাখ লোকবল থাকা যুক্তরাষ্ট্র রেমিট্যান্স আয়ের প্রধান উৎস হয়ে যাচ্ছে- সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তিনি। তাহলে সৌদির আয় আমেরিকা ঘুরে আসছে কি না তা নিয়ে কাজ করতে বলেন তিনি।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page